হিন্দুদের ধর্মীয় ট্রাস্টে মুসলিমদের জায়গা হবে তো? ওয়াকফের শুনানিতে কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিমকোর্টের

Waqf law at sc


বুধবার ওয়াকফ আইন নিয়ে শুনানি হয় সুপ্রিমকোর্টে। আর সুপ্রিম শুনানিতে ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কমিটির সমস্ত সদস্য মুসলিম হতে হবে, ব্যতিক্রম শুধু পদের দৌলতে বোর্ডের সদস্যপদ পাওয়া ব্যক্তিরা। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের ধর্মীয় ট্রাস্টে মুসলিমদের জায়গা দেওয়া হবে কি, কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

বিচারপতি কুমার বলেন, ‘‘তিরুপতি বোর্ডে কি হিন্দু নন, এমন কেউ রয়েছেন?’’ প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, হিন্দুদের ধর্মীয় সম্পত্তির দায়িত্বে অন্য কোনও ধর্মের কেউ থাকেন না। এদিকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কোনটা ওয়াকফ সম্পত্তি, কোনটা নয়, তা নিয়ে কোর্টকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হোক।’’ জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘জেলাশাসক যদি সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন যে, কোনটা ওয়াকফ, কোনটা নয়, তা কি ঠিক হবে?’’ আইনে ৯ নম্বর ধারা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি।

প্রধান বিচারপতির আইনজীবী মেহতাকে প্রশ্ন, ‘‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?’’ প্রধান বিচারপতি বলেন, "বিচারপতির আসনে যখন বসি আমরা, ধর্ম থাকে না আমাদের। আমাদের কাছে সবপক্ষই সমান।"। এর পরই CJI জানতে চান, "তার মানে কি বলতে চাইছেন, হিন্দুদের ধর্মীয় ট্রাস্টের বোর্ডে মুসলিমদের জায়গা হবে? প্রকাশ্যে বলুন।" প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, "২৬ নং ধারা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। এটা সব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য।"

ওয়াকফ সংশোধিত আইন নিয়ে অন্তর্বর্তী কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার আবার শুনানি। সলিসিটর জেনারেল মেহতা আদালতের কাছে আরোও একদিন সময় চান সরকারের কথা শোনার জন্য সেই আর্জি মেনে নিয়ে আদালত সময় দেন।

এদিন আদালত অন্তর্বর্তী প্রস্তাব রাখে যে-

আদালতে কোনও সম্পত্তি যদি ওয়াকফ বলে চিহ্নিত হয়ে থাকে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে শুনানি চলাকালীন কোনও মতেই সেটিতে রদবদল ঘটানো যাবে না। সেই সম্পত্তি কোনও ব্যক্তি ওয়াকফ হিসেবে দান করে থাকুন বা ওয়াকফ চুক্তি হয়ে থাকুক, সব ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য।

কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ না কি সরকারি সম্পত্তি, জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্ত চলাকালীন সেই সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে গন্য করা হবে না বলে উল্লেখ রয়েছে আইনে। কিন্তু এখনই সেই নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে আদালত।

ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কমিটির সব সদস্যকে মুসলিম হতে হবে। একমাত্র ব্যতিক্রম সরকারি আধিকারিক অথবা কোনও পক্ষের প্রতিনিধি হওয়ার দরুণ যাঁরা আপনাআপনিই বোর্ডের সদস্যপদ পান, তাঁদের ক্ষেত্রে ধর্মপরিচয় বাধ্যতামূলক নয়।


ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কিছু এলাকায় অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। শুনানি শেষে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘যে হিংসা হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। এ রকম হওয়া উচিত নয়।’’