দেড় দশকেও ফিরল না রফিকুল, ছেলের অপেক্ষায় এখনও প্রহর গুনছেন মা
দেড় দশকেও ফিরল না রফিকুল, ছেলের অপেক্ষায় এখনও প্রহর গুনছেন মা সোনাভান। সাবেক ছিটমহলের পোয়াতের কুঠিতে এক মায়ের অসীম প্রতীক্ষার গল্প।
দিনহাটা মহকুমার সাবেক ছিটমহলের ছোট্ট গ্রাম পোয়াতের কুঠিতে প্রতিদিন ঘরের দরজার দিকে চেয়ে থাকেন বৃদ্ধা সোনাভান বিবি। প্রায় ১৫ বছর আগে তার একমাত্র ছেলে রফিকুল শেখ কাজের সন্ধানে রওনা দিয়েছিলেন রাজধানী দিল্লির উদ্দেশে। তখনকার মতো একবার ফোনে কথা হলেও, তারপর আর কোনও যোগাযোগ হয়নি।
তখন থেকেই প্রতীক্ষার শুরু—যার শেষ আজও হয়নি।
রফিকুলের বাবা মইনুদ্দিন শেখ বলেন, “অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। আত্মীয়দের জিজ্ঞেস করেছি, দিল্লির কর্মরত দিনহাটার পরিযায়ী চেনা লোকদের দ্বারস্থ হয়েছি—কিন্তু রফিকুলের আর কোনও খোঁজ পাইনি।”
ঘরের এক কোণে ছেলের ছবি নিয়ে বসে থাকেন সোনাভান বিবি। দরজায় কেউ টোকা দিলেই বুক ধড়ফড় করে ওঠে তার—এই বুঝি রফিকুল ফিরল।
“প্রতিদিন ভাবি, হয়তো আজ ফিরে আসবে। একটা খবর হলেও যদি আসতো...”—কাঁপা গলায় বলেন মা সোনাভান।
এই দীর্ঘ প্রতীক্ষা শুধু একটি মায়ের নয়, এটি এক নিঃসঙ্গ পরিবারের কষ্টের কথা, যা সাবেক ছিটমহলের পরিত্যক্ত এলাকায় আরও বেশি নিঃসহায় করে তোলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রফিকুল নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবার নানা চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোনও সরকারি সহায়তা তেমন মেলেনি। তারা আশা করেন, আজও যদি প্রশাসনিক স্তরে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়, হয়তো ছেলের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
এই নিঃসঙ্গ অপেক্ষা কেবল এক ব্যক্তির গল্প নয়—এটি এক সমাজের, এক দেশের নিখোঁজ ছেলেদের গল্প, যারা রোজ হারিয়ে যায়—ফিরে আসে না, কিন্তু থেকে যায় মা-বাবার বুক ভরা অপেক্ষায়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊