যোগান থাকলেও চাহিদা নেই বাংলাদেশী ইলিশের, চাপে মাছ ব্যবসায়ীরা

hilsha



শিলিগুড়ি : বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। যার মাঝে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গাপুজো। আর এই দুর্গাপুজোর কটা দিন হই হুল্লোর, প্যান্ডেল হপিং, খাওয়া-দাওয়া ও নতুন পোশাক পরিধানের মধ্য দিয়েই কাটিয়ে দেয় আপামর বাঙালি। আর খাওয়া-দাওয়ার কথা উঠলে বাঙালির পাতে বাংলাদেশের রূপালী শস্য ইলিশের কথা হবে না তা কখনো ভাবাই যায় না। তাই পূজোর কটা দিনে প্রত্যেক বছরই ব্যাপক চাহিদা থাকে ছোট-বড়-মাঝারি সকল সাইজের ইলিশের।

তবে এই বছর ছবিটা অনেকটাই আলাদা। বাজারে রূপালী শস্য ইলিশের যোগান থাকলেও চাহিদা নেই তেমন। ইতিমধ্যেই বাংলা জুড়ে প্রবেশ করেছে ওপার বাংলার ইলিশ। যার মধ্যে রয়েছে পদ্মার ইলিশও। ঠিক তেমনি শহর শিলিগুড়িতেও প্রায় এক টন ইলিশ ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে। যার মধ্যে ছোট সাইজের ইলিশের যোগান বেশি রয়েছে এবং তার পাশাপাশি রয়েছে মাঝারি ও বড় সাইজের ইলিশও। তবে যোগান থাকলেও তেমন চাহিদা নেই বলছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

এদিন এই বিষয়ে শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটের হোলসেল ফিস মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপি চৌধুরী জানান, প্রত্যেক বছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক যোগান রয়েছে ইলিশের। তবে মাঝে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া উত্তাল পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে এবার ইলিশের চাহিদায়। কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে যে তথ্য ছড়ানো হয়েছিল যেখানে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে এবছর একটিও ইলিশ মাছ এবাংলায় প্রবেশ করবে না, তবে গত কয়েকদিন আগেই সেই তথ্যকে ভুল প্রমাণিত করে বাংলা জুড়ে ওপার বাংলা থেকে ইলিশের আমদানি হয়েছে, যার ফলে সেই ভুল তথ্যের অনেকটাই প্রভাব পড়েছে এবার ইলিশের বাজারে।

এছাড়াও যোগান অতিরিক্ত হওয়ায় এবং বিক্রি একদম না হওয়ায় ইলিশের দাম এবার অনেকটাই কমে গিয়েছে। যার ফলে কম দামে ইলিশ বিক্রি করে ক্ষতির মুখ দেখতে হচ্ছে মাছ ব্যবসায়ীদের। এর পেছনে কারণ হিসেবে মূলত তিনি জানান, বাংলাদেশের বেশ কিছু বিষয়ের উপর ক্ষুব্ধ রয়েছেন এ বাংলার মানুষ। যে কারণেই বাঙালি ভোজন রসিকদের প্রিয় ওপার বাংলার রূপালী শস্য ইলিশ কে অনেকটাই বয়কট করছেন সাধারণ মানুষ।

প্রত্যেকবার দাম বেশি থাকলেও "দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেন" ইলিশ প্রিয় বাঙালিরা। কম দামে ছোট ইলিশ হলেও এই পুজোর মরশুমে নিয়ে যেতেন আপামর বাঙালি। তবে এবার পরিস্থিতিটা একদম উল্টো। দাম কম থাকলেও কেউই ইলিশ নিয়ে যেতে চাইছেন না। পুজোর আগ মুহূর্তে এহেন পরিস্থিতি অনেকটাই ভাবাচ্ছে মাছ বিক্রেতাদের। সকলে মনে করছেন এবার পুজোর মধ্যেও তেমন ইলিশের চাহিদা থাকবে না। কিন্তু যদি সত্যি তাই হয় তাহলে ব্যাপক ক্ষতির মুখ দেখতে হবে মাছ ব্যবসায়ীদের তা বলাই বাহুল্য।