ত্রাণ নিয়ে বন্যা কবলিত হুগলীবাসীর পাশে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন UUPTWA

UUPTWA primary teachers' organization stands by the flood-hit Hooghly people with relief

গৌতম সাহা, আরামবাগঃ

গত সপ্তাহে সৃষ্ট নিন্মচাপের ফলে হওয়া ভীষণ বৃষ্টিপাতে পশ্চিমবঙগতে অবস্থিত বেশ কয়েকটি জলাধারে বিপদসীমার উপরে জল থাকায় DVC কর্তৃপক্ষ জল ছাড়তে বাধ্য হয়। কয়েক হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয় পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে। এর ফলে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ মেদিনীপুরের কয়েকটি অংশে প্লাবন দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে আরামবাগের বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। খানাকুলেও বন্যার মতো পরিস্থতি সৃষ্টি হয়েছে। মূলত রূপনারায়ন, দ্বারকেশ্বর, মুন্ডেশ্বরীর একাধিক বাঁধ ভেঙে এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে ফলে গ্রামের পর গ্রাম জলবন্দি এমনকি একতলার ঘরগুলো জলের তলায় অবস্থান করছে। স্থানীয় মানুষদের কথায় এমন পরিস্থিতি ৭৮ সালেও হয়নি। চারিদিকে ত্রানের জন্য হাহাকার। সমস্ত বন্যা দূর্গত এলাকায় ত্রাণ এখনও পৌছায়নি। চারিদিকে পানীয় জল ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

এমন এক পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন UUPTWA এর রাজ্য কমিটির নির্দেশে হুগলি জেলা কমিটির শিক্ষকরা ত্রাণ নিয়ে পৌছে গেলেন বন্যা কবলিত এলাকায়।

প্রাথমিকভাবে খানাকুল ২ নং ব্লকের ধান্যগড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাকনান,রামচন্দ্রপুর এলাকায় সাধ্যমত ত্রাণ সামগ্রী জোগাড় করেই উস্থিয়ান শিক্ষক সদস্যরা পৌছে যান এবং ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেন দূর্গত মানুষদের মধ্যে। এছাড়াও সন্ধাবেলায় পুরশুরা ব্লকের শ্যামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওয়ানপাড়া এলাকায় কমিউনিটি কিচেনের মাধ্যমে রান্না করা খাবার অভুক্ত মানুষের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

UUPTWA primary teachers' organization stands by the flood-hit Hooghly people with relief

এই বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের UUPTWA এর রাজ্য সম্পাদক ভাস্কর ঘোষের সঙগে যোগাযোগ করে হলে তিনি জানান আজ থেকেই ত্রাণের কাজ তারা শুরু করেছেন। আগামিদিনে আরও বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত জায়গায় তারা পৌছাতে চান। ইতিমধ্যে তিনি জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ তহবিল তৈরী করছেন। সংগঠনের সদস্য শিক্ষক- শিক্ষকাদের এই ত্রাণ তহবিলে সমস্ত রকমের সাহায্য করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি জানান বন্যা কবলিত এলাকায় যেখানে কোন ত্রাণ একদমই পৌছায়নি সেখানেই তিনি তাদের সংগঠনের সদস্যদের দ্রুত পৌছে যেতে নির্দেশ দেবেন। তারপর অন্যান্য এলাকায় ধীরে ধীরে যাবেন তাদের সদস্যরা। এই সংকট মোকাবিলায় তিনি এবং তাদের সংগঠন সচেষ্ট।

UUPTWA সংগঠনের হুগলি জেলা নেতৃত্ব তন্ময় ঘড়ুই এর সঙগে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত এই জায়গা গুলিতে  কোন সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণকার্য শুরু হয়নি ।কিন্তু উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর শিক্ষকরা ওখানে পৌঁছে যান ।তাদের ত্রাণে মূলত শুকনো খাবার , বিস্কুট ,মুড়ি ,চানাচুর, স্যানিটারি ন্যাপকিন ও পানীয় জল ত্রাণ হিসাবে দেয়া হয়। এছাড়াও ওখান থেকে বেশ কিছু মানুষকে নৌকাতে উদ্ধার করে বিভিন্ন ফ্লাড সেন্টারে পৌঁছে দেওয়া হয় । প্রায় ৩০০টি পরিবারের হাতে ত্রাণসমগ্রী তুলে দেয়া হয়েছে। অন্যত্র পরিস্থিতি ভীষণভাবে খারাপ । একতলা বাড়িগুলি জলের তলায় এবং বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  তার দেখা ইতিমধ্যে ২৫ থেকে ৩০ টি বাড়ি ভাঙ্গা পড়েছে। বহু গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন। হুগলি জেলার খানাকুল ১ নম্বর এবং ২'নম্বর ব্লকএবং পুড়শুড়া ব্লকের প্রায় ১০০ টির মতো গ্রাম জলমগ্ন।