১০ হাজার কেউসেক জল ছাড়লো মাইথন, লাগাতার বৃষ্টিতে ভয়ানক পরিস্থিতি, মৃত ১

mython


রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী: আসানসোল:-


অন্য সময় শান্ত, কিন্তু বর্ষার সময় অতিভারী বৃষ্টিপাত হলেই গারুই ও নুনিয়া নদী যে কী ভয়ংকর রূপ ধারণ করে সেটা প্রতিবছর আসানসোলের রেললাইন পাড় সংলগ্ন নীচু এলাকার বাসিন্দারা হাড়েহাড়ে টের পায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলনা। ওই দুই নদীর পার্শ্ববর্তী নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে।


এদিকে মাইথন জলাধার থেকে দশ হাজার কিউসেক জল ছাড়লো ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এদিন একটি গ্যালারি এবং ডাইডেল পাওয়ার স্টেশন থেকে প্রায় ১০হাজার কেউসেক জল ছাড়া হয়।


গত তিন'দিন ধরে নিম্নচাপ জনিত একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যর বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে আসানসোলেও প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় সড়ক, দূর্গাপুর, জামুড়িয়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা সব জলমগ্ন। রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল ব্যহত হয়ে পড়েছে।অনেক বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। এরফলে সমস্যায় পড়েছেন এলাকার মানুষ। ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষে বলে যানান একজন সবজি চাষী।আসানসোল বাসস্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর গাছ পড়েছে, প্রাচীর ও কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে৷ আশঙ্কা যদি আরও বৃষ্টি হয় তাহলে পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।


বারাবনি ব্লকের ইটাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিগঞ্জ চটি গ্রামে সোমবার সকালে বাড়ির গোয়ালঘরের গবাদিপশু বাঁচাতে গিয়ে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। তিন দিনের টানা বৃষ্টির মধ্যে গোয়ালঘর নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার এদিন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রানিগঞ্জ চটি গ্রামে। এই ঘটনায় গোয়ালঘরের ভাঙা দেওয়ালের তলায় চাপা পড়ে মারা গেছে একটি গরু। জখম হয়েছে আরো একটি গরু। মৃত ব্যক্তির নাম অশোক বন্দোপাধ্যায় (৫২)।


জানা গেছে, আসানসোলের বারাবনি ব্লকের ইটাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিগঞ্জ চটি গ্রামে বন্দোপাধ্যায় পরিবারের একটি গোয়ালঘরে ২০/২৫ টির মতো গরু রাখা ছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ সেই গোয়ালঘর থেকে হঠাৎ একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পান গোয়ালঘরের মালিক পরিবারের সদস্য অশোক বন্দোপাধ্যায়। তিনি কাকা ভোলানাথ বন্দোপাধ্যায়কে সেই কথা বলে গোয়ালঘরে থাকা গরুগুলো খুলতে যান। ভোলানাথবাবুও ভাইপোর সঙ্গে গোয়ালঘরে যান। গোয়ালঘরে গরু খোলার সময় একটি দেওয়াল ভেঙে পড়ে।ভোলানাথবাবুর চিৎকারে বাড়ির সদস্য ও আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন। সেই দেওয়ালের তলায় চাপা পড়েন ৫২ বছরের অশোকবাবু বেশ কয়েকটি গরুও। এরপর সবাই মিলে দেওয়ালের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে দেখেন তার তলায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন অশোকবাবু। তার সঙ্গে চাপা পড়ে রয়েছে দুটি গরুও। সঙ্গে সঙ্গে অশোকবাবুকে কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর সেই মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে।


অন্যদিকে যে দুটি দেওয়ালের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ছিলো গরুগুলো তার মধ্যে একটা গরুর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছে অন্য গরুটি।