প্রধানমন্ত্রী দেশের লজ্জা! আমরা ইতিহাস গড়লাম: বিধানসভায় মমতা

mamata banerjee


বিধানসভায় পেশ হয় ধর্ষন বিরোধী বিল আর সেই বিল ধ্বনি ভোটে পাশও হয়ে যায়। অপরাজিতা বিল প্রসঙ্গে কথা বলার সময় মমতা বললেন, ‘‘এই বিল একটা ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী পারেননি। আমরা পারলাম। করে দেখালাম। প্রধানমন্ত্রী দেশের লজ্জা! উনি মেয়েদের রক্ষা করতে পারেননি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। ’’

গুজরাত এবং উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কথা বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়কেরা চিৎকার করতে শুরু করেন। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তৃতা চলাকালীনই পদত্যাগের দাবি তুলছিলেন বিরোধীরা। মমতা তাদের জবাব দিয়ে হুঙ্কার দিয়ে বললেন, ‘‘আগে নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগ চাই। তার পরে বাকি কথা।’’ এদিন তিনি বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যেই বলতে থাকেন। বিরোধীদের বললেন, ‘‘আমাকে কটু কথা বললে আমার কিচ্ছু যায়-আসে না। আপনারা যা বলছেন বলুন। কিন্তু বাংলা মা-কে বদনাম করবেন না। আপনারা আমাকে যা যা বলছেন, তা যদি আমার দলের লোকেরা প্রধানমন্ত্রী আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, তা হলে কেমন লাগবে?’’ বিরোধী বিধায়কদের বললেন, আমি হাতজোড় করে বলছি, আপনারা চুপ করে শুনুন।


এদিন তিনি বলেন, "সবাই আমার বিরোধিতা করলেও, আমি তাঁদের বিরোধী নই। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলব, মেয়েদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে, যখন দিনটি ঠিক করেছিলাম, তখনও জানতাম না। কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। মেয়েদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনেই রাষ্ট্রপুঞ্জ মেয়েদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সব বৈষম্য দূর করতে, কনভেনশন অফ দ্য এলিমিনেশন অফ অল ফর্ম অফ ডিসক্রিমিনেশন সম্মেলন হয়। আজ সেই দিন।"



কামদুনি মামলায় সরকারি কৌঁসুলি পাল্টানোর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ৭ জুন। চার্জশিট তিন সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করে সিআইডি, ২৮ জুন। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হয় ১০ জুলাই। কিন্তু আদালত রায় দেয় ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি। আদালত আমাদের হাতে নেই, আপনাদের হাতে রয়েছে। তাই আপনাদের অনুরোধ করছি। আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম, কিন্তু কোর্ট শাস্তি দিয়েছিল। একজন মারা যায় বিচার চলাকালীন। তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড তিন জনকে যাবজ্জীবন এবং দু'জনকে খালাস করা হয়। যাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা আবেদন জানাই। এর পর হাইকোর্ট ২০২৩ সালে দুই জনকে যাবজ্জীবন দেয়, একজনকে ছেড়ে দেয়, তিন জনকে সাত বছরের সাজা দেওয়া হয়। খালাস পেয়ে যাওয়া দুই জনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাই। সেটা এখনও ঝুলে রয়েছে। জবাব চেয়েছিলেন বিরোধীরা, আমি জবাব দিলাম।"


ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "১৯১৩ সালে যে ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট ছিল, তার খরচ বহন করত কেন্দ্র। ২০১৩ সাল থেকে সেই টাকা বন্ধ। তার পরও আমাদের রাজ্যএ বর্তমানে ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট রয়েছে। মহিলাদের জন্য ৫২টি ডেজিগনেটেড কোর্ট রয়েছে, যাতে দ্রুত বিচার হয়। ৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৬২০টি মামলা দায়ের হয়েছে সেখানে, যার মধ্যে ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৪৭৯টি মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। ৭ হাজার মামলা কোর্টে পেন্ডিং রয়েছে।"