বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশজুড়ে চলা 'শাটডাউন' কর্মসূচি ঘিরে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু

In Bangladesh, at least 25 people have died due to the nationwide 'shutdown' program demanding quota reform
photo: collected


কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশজুড়ে চলা 'শাটডাউন' কর্মসূচি ঘিরে সারাদেশে অন্তত ২৫ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ১১ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া। ঢাকায় এ নিয়ে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে।

কোটা সংস্কারের পক্ষে সরকার নীতিগতভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার দিনভর ও রাতে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর বন্ধ রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঢাকাসহ সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছিলেন। এদিকে কোটা আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি ঘিরে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার ঢাকায় দেশটির দূতাবাস বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

In Bangladesh, at least 25 people have died due to the nationwide 'shutdown' program demanding quota reform
photo: collected

টানা দুই দিন শাটডাউন কর্মসূচির পর পরবর্তীতে শনিবার থেকে কোন কর্মসূচি কি অব্যাহত থাকবে? এই প্রশ্নে নাহিদ ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, “আন্দোলনের বিষয়টি আর কোটা সংস্কারে নেই। এই যে শিক্ষার্থীদের গুলি করে মারা হল, সাধারণ মানুষের ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, আবাসিক হলগুলো থেকে আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছে আমরা এর বিচার দাবি করছি”।


তিনি জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল সারা দেশ। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে আলোচনা করতে নারাজ কোটা আন্দোলনকারীরা।

সন্ধ্যা সাতটার পর কোটা আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক ফেসবুকে এক পোস্টে এ বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতা চালিয়ে সরকার উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর দায় সরকারেরই। সরকার আলোচনার কোনো পরিস্থিতি রাখেনি।

In Bangladesh, at least 25 people have died due to the nationwide 'shutdown' program demanding quota reform
photo: collected

যদি এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজপথ থেকে সরানো না হয়; যদি হল, ক্যাম্পাস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে।

কেবল কোটা সংস্কার করলেই ফয়সালা হবে না। প্রথমে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে সরকার দাবি কর্ণপাত করেনি৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা করছে। এখন সংলাপের নামে, দাবি আদায়ের নামে নতুন প্রহসন করছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির নামেও কোনো প্রসহন মেনে নেওয়া হবে না।

সকল ছাত্র হত্যার বিচার করতে হবে। ক্যাম্পাসগুলোকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ করতে হবে। শহীদের রক্তের উপর কোনো সংলাপ হবে না। সরকারকেই সমাধানের পথ বের করতে হবে৷

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আহ্বান থাকবে খুনি সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্রদের পাশে থাকুন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান থাকবে বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন। বাংলাদেশে গণহত্যা চলছে।

আমাদেরকে আজকে রাতের মধ্যেই গ্রেফতার অথবা গুম করে ফেলতে পারে। আপনারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। সবাই জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিটা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করুন।’