চাকরি ফেরতের দাবীতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে অনশনে বসলেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা
গৌতম সাহা, কোলকাতা :
কিছুদিন আগেই দুর্নীতির কারণে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের নবম-দশম,একাদশ-দ্বাদশ,গ্রুপ- সি, গ্রুপ- ডি চাকরির পুরো প্যানেল বাতিল করেছিল। ফলে ২৫,৭৫৩ জন চাকরিজীবী রাতারাতি চাকরি হারিয়েছেন। এমন এক সংকটে পড়ে কি করবেন,কোথায় যাবেন বা চাকরি কিভাবে ফেরত পাবেন ইত্যাদি বিষয়ে তারা দিশাহারা!
স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন যাতে বাতিল হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুনর্বহাল করা যায়। কিন্তু হাইকোর্টে মাননীয় বিচারপতি এস.এস.সি কে বারংবার বলা সত্ত্বেও OMR শিট প্রকাশ করে যোগ্য,অযোগ্যদের আলাদা করতে উদ্যোগ নেননি তাহলে কি আদৌও চাকরি তারা ফেরত পাবেন? কারণ চাকরিতে দূর্নীতি হয়েছে সেটি তদন্তকারী সংস্থা বলেছেন এবং তা রাজ্য সরকারও স্বীকার করে নিয়েছেন। অর্থ্যাৎ চাকরিতে বেনোজল ঢুকেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে যোগ্য, অযোগ্যদের পৃথকীকরণ করার একমাত্র রাস্তা ছিল OMR শিট প্রকাশ করা। কিন্তু এস.এস.সি মারফত তা হয়নি।
ইতিমধ্যে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে যোগ্য ও নায্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বাঁচাতে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহতগি কে নিয়োগ করা হয়েছে। চাকরিহারা শিক্ষক- শিক্ষিকাদের পিটিশনার হিসাবে যুক্ত করে SLP মামলা দায়ের হয়েছে যার শুনানী আগামী সোমবার নাগাদ হতে চলেছে।
অনশনকারী নাকাশিপাড়া ম্যাচপোতা উঃ মাঃ বিদ্যলয়ের শিক্ষক শ্রী সুমন বিশ্বাস জানালেন তিনি এবং আরও তিনজন শিক্ষক- শিক্ষিকা মিলে চারজন এই অনশনে অংশগ্রহণ করছেন এবং তারা প্রত্যেকেই যোগ্য ও নায্য শিক্ষক।
কোনরকম দুর্নীতি করে তিনি বা তেনারা চাকরি পাননি। অযোগ্য বা চাকরি চুরির সঙগে যুক্ত শিক্ষক- শিক্ষকাদের জন্য তাদের বলি হতে হয়েছে। তাই ন্যায় ও চাকরি ফেরত পেতে এই অনশন তারা চালিয়ে যাবেন। আগামিতে আরও অনেক শিক্ষক- শিক্ষিকা এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে চলেছেন।
ইতিমধ্যে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মাননীয় বিচারপতি ডি.ওয়াই.চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানী হয়েছে। এই মামলায় সেইদিনই রাজ্যসরকার এবং এস.এস.সি হাইকোর্টের পুরো রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চান কিন্তু মাননীয় বিচারপতিরা পুরো রায়ের উপর অর্থ্যাৎ ১৪ টি রায়ের উপর স্থগিতাদেশ না দিয়ে কেবলমাত্র একটি রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেন। মাননীয় বিচারপতি বলেন সবপক্ষের রায় শুনেই তিনি তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি যোগ্য, অযোগ্যদের পৃথকীকরণ এর ব্যাপারে খুবই জোর দেন। এর উত্তরে এস.এস.সি জানিয়েছেন যোগ্য,অযোগ্যদের আলাদা করতে তারা প্রস্তুত। এখন অনশনকারীদের বক্তব্য তাহলে এস.এস.সি এই বিষয়টি হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন করতে পারলেন না কেন?
আদৌও কি এস.এস.সি যোগ্য,অযোগ্যদের পৃথক করতে পারবেন ফলে নায্য ও যোগ্য চাকরিজীবিরা তাদের চাকরি ফিরে পাবেন? দেখা যাক আগামী দিনে কি হতে চলেছে! এখন ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক- শিক্ষিকা সমেত গোটা বাংলার আপামর জনগণ অপেক্ষায় রয়েছে আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে কি হতে চলেছে ! যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা কি আদৌও ন্যায় বিচার পাবেন?
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊