কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে গ্রন্থপ্রকাশ


Book release on the 125th birth anniversary of Kazi Nazrul Islam




নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী বিশেষভাবে পালিত হলো। সমগ্র জীবনে কাজী নজরুল ইসলাম একাধিকবার বাসা বদল করেছেন। কৃষ্ণনগরে নজরুল প্রায় আড়াই বছর (১৯২৬-২৮ খ্রি.) যে বাড়িটিতে সপরিবার ছিলেন, সেটির নাম গ্রেস কটেজ। এটি একটি হেরিটেজ ভবন। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন এই বাড়িটিকে হেরিটেজ ভবন বলে ঘোষণা করে।

নজরুল স্মৃতিধন্য এই ঐতিহাসিক ভবনেই তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে (২৫ মে, ২০২৪) সকাল ন'টা থেকে শহরের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘সুজন-বাসর ও নজরুল গবেষণা কেন্দ্র’-এর উদ্যোগে পথপরিক্রমার মধ্যে দিয়ে নজরুল জন্মোৎসব শুরু হয়।

পথপরিক্রমার পর গ্রেস কটেজ প্রাঙ্গণে স্থাপিত নজরুল মূর্তি এবং ভিতরের ঘরে স্থাপিত নজরুল প্রতিকৃতিতে মাল্য অর্পণ করা হয়। এর পর গ্রন্থপ্রকাশ, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, নৃত্য গীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে নজরুল জন্মোৎসবের অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে।

এদিন গ্রেস কটেজে দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রথমটি ছিল অনুবাদক গিয়াসউদ্দিন দালাল কৃত ‘অগ্নিবীণা’র ইংরেজি অনুবাদ, যার প্রকাশক আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ। আর এদিন গ্রেস কটেজে দ্বিতীয় যে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়, সেটি হলো ‘কাজী নজরুল ইসলাম: একশো পঁচিশে’, সংগ্রহ-সংকলন-গবেষণা-সম্পাদনা দীপাঞ্জন দে। বৃহৎ কলেবরের এই গ্রন্থটির প্রকাশক গেটওয়ে পাবলিশিং হাউস।

Book release on the 125th birth anniversary of Kazi Nazrul Islam

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সম্পদনারায়ণ ধর ও আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী মুক্তমঞ্চ ‘শিকড়ের সন্ধানে’-র আহ্বায়ক মণিমোহন ধর গ্রন্থটির আবরণ উন্মোচন করেন। সেই সময় সভাকক্ষে একাধিক বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। আর উপস্থিত ছিলেন এই গ্রন্থের প্রকাশক তন্ময় ধর এবং গ্রন্থটির সম্পাদক দীপাঞ্জন দে।

এই গ্রন্থটির দুই মলাটের ভিতর নজরুলের সমগ্র জীবন বিভিন্ন পর্ব, নজরুল সম্পর্কিত প্রবন্ধ মালা, কবিতা, চিঠি-চাপাটি, নথিপত্র প্রভৃতি আরো বহুবিধ বিষয় সযত্নে লিপিবদ্ধ করে রাখার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। নজরুলচর্চার ক্ষেত্রে কতটা উল্লেখযোগ্য এই নির্মাণ, সেই অভিমত পাঠকেরা দেবেন নিশ্চয়। তবে দুই মলাটের ভিতর সমগ্র নজরুল জীবনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরা একপ্রকার অসম্ভব। সেই সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিয়ে এই গ্রন্থের কলেবরে সাধ্যমত নজরুল-সমাহার করে এই মুদ্রণ পাঠকদের সম্মুখে পরিবেশন করা হয়েছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বৃহত্তর বাংলার নজরুল পাঠকেদের কথা মাথায় রেখে এই প্রচেষ্টা করা হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এই উদ্যোগ এক বিশেষ প্রচেষ্টাস্বরূপ।