Mukhtar Ansari Death: উপ-রাষ্ট্রপতির ভাগ্না, স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতীর মাফিয়া হয়ে উঠা মুখতার আনসারির মৃত্যু


Mukhtar Ansari Death
Mukhtar Ansari 


Mukhtar Ansari Death: সময় সবার সবসময় সমান থাকে না, বদলে যায়। যে মুখতার আনসারির ইঙ্গিতে সরকার তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করত, আজ জেলে বন্দি অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাঁচজন চিকিৎসকের একটি প্যানেল ময়নাতদন্ত করবে। এরপর মুখতারের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আসুন জেনে নিই কিভাবে একজন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির ভাগ্নে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী ডঃ মুখতার আহমেদ আনসারির নাতি মাফিয়া হয়ে উঠলেন...

অবধেশ রাই হত্যা মামলায় মুখতার আনসারিকে প্রথমবারের মতো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর আগে তিনি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাঞ্জাবের রোপার জেল থেকে ইউপিতে ফিরে আসার পর মুখতারের ওপর আইনের ফাঁস শক্ত হতে শুরু করে। দুই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ দেড় বছরের মধ্যে তাকে আটবার বিভিন্ন আদালত সাজা দিয়েছেন। এতে তার পক্ষে জেল থেকে জীবিত বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

গাজিপুর জেলার ইউসুফপুরের বাসিন্দা মাফিয়া মুখতার আনসারি, ১৯৮৮ সালে হরিহরপুরের সচ্চিদানন্দ রাই হত্যাকাণ্ডে প্রথম অপরাধ জগতে আসেন। কয়েক বছরের মধ্যেই পূর্বাঞ্চলের সব খুন ও চুক্তিতে প্রকাশ্যে মুখতারের নাম ব্যবহৃত হতে থাকে। ক্ষমতা ও প্রশাসনের সুরক্ষা পেয়ে মুহাম্মাদবাদ থেকে বেরিয়ে এসে অপরাধ জগতে বড় নাম হয়ে ওঠেন মুখতার আনসারি। প্রায় ৪০ বছর আগে রাজনীতিতে আসা মুখতার অল্প সময়ের মধ্যেই একজন প্রভাবশালী নেতা হয়ে ওঠেন। তিনি জনগণের প্রথম পছন্দ হয়ে পাঁচবার বিধানসভায় পূর্বাঞ্চলের মৌ আসন থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন।

মুখতার আনসারি উত্তর প্রদেশের গাজিপুর জেলার ইউসুফপুরে 1963 সালের 30 জুন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি মুখতার আহমেদ আনসারির নাতি ছিলেন। মুখতার আনসারি মূলত মাখনু সিং গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন, যেটি 1980 এর দশকে বেশ সক্রিয় ছিল। আনসারির এই দলটি কয়লা খনন, রেলপথ নির্মাণ, স্ক্র্যাপ নিষ্পত্তি, গণপূর্ত এবং মদের ব্যবসার মতো সেক্টরে জড়িত ছিল। অপহরণ, খুন, ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও চালাতেন।

মৌ, গাজিপুর, বারাণসী ও জৌনপুরে বেশি তৎপরতা ছিল। 20 বছরের কম বয়সে মাখনু সিং গ্যাংয়ে যোগ দিয়ে, মুখতার অপরাধের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকে। ভূমি দখল, অবৈধ নির্মাণ, খুন, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধ জগতে মাত্র কয়েকটি কাজ আছে যার সাথে মুখতারের নাম জড়িত নয়।

মাফিয়া মুখতার আনসারি প্রায় 18 বছর ধরে কারাগারের আড়ালে ছিলেন। মৌ দাঙ্গার পর, মুখতার আনসারি 25 অক্টোবর 2005 সালে গাজীপুরে আত্মসমর্পণ করেন এবং সেখানে জেলা কারাগারে যান। মুহাম্মাবাদের ফাটাকের বাসিন্দা মুফতার আনসারি চার দশক ধরে জরায়মের সংসারে বসবাস করেন। এই সময়কালে অনেক বিখ্যাত অপরাধমূলক ঘটনায় মুখতার আনসারির নাম উঠে আসে।

গতকাল রাতে হৃদরোগে মারা যান মুখতার আনসারি। জেল সূত্রের দাবী, মেডিকেল কলেজে নয়, কারাগারেই তদন্তের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন মুখতার। এর পরেই অফিসারদের একটি দল অবিলম্বে একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়।

যেখানে প্রায় এক ঘণ্টা জীবন-মৃত্যুর মধ্যে লড়াই করেন মুখতার। রাত 9.30 টার দিকে তিনি মারা গিয়েছিলেন, তবে এটি প্রায় এক ঘন্টা পরে 10.30 টায় নিশ্চিত হয়েছিল। তার আগে সম্পুর্ণ হাসপাতাল সেনাবাহিনি দ্বারা ঘিরে নেওয়া হয়।

দুদিন আগে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফিরে আসার পর মুখতার খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। বুধবার পর্যন্ত মাত্র কিছু ফল খেয়েছেন। কারা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ফের তার শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। খবর পেয়ে জেলা হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না মুখতারের।