চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
নিজস্ব সংবাদদাতা: নদিয়া জেলার একটি অন্যতম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় (chapra bangaljhi mahavidyalaya) । ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বুধবার) এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হলো। চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ের স্মার্ট ক্লাস রুমে দুপুর ১২টা থেকে ভাষা দিবসের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সমগ্র অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল কলেজের সাংস্কৃতিক বিভাগ। মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেও একাধিক জন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের সূচনায় কলেজের (chapra bangaljhi mahavidyalaya) পক্ষ থেকে তৈরি ভাষাশহীদ স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। কলেজের সকল অধ্যাপক অধ্যাপিকারা একে একে ভাষাশহীদ স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেও একাধিক জন ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের সাংস্কৃতিক বিভাগের সম্পাদক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বাসুদেব ঘোষ। স্বাগত ভাষণে তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব স্বীকার করেন ও এই উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।
চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ে (chapra bangaljhi mahavidyalaya) প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষভাবে উদ্যাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলা ভাষা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এবারের ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক দীপাঞ্জন দে। তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল— ‘ভাষা দিবসের পটভূমি সম্পর্কিত কিছু অনালোচিত বিষয়’। এই বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি কানাডা নিবাসী দুই প্রবাসী বাঙালির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রস্তাবটি রাষ্ট্রসঙ্ঘে উত্থাপন ও সাফল্যের সঙ্গে বিষয়টি সকল রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের কর্তৃক মেনে নেওয়ার পশ্চাতে দুইজন বাঙালির নিরলস প্রচেষ্টার আখ্যান তিনি এদিন সবিস্তারে উপস্থাপন করেন। আলোচনার শেষ লগ্নে ১৯৫২-র ভাষা শহীদ রফিক, সালাম, বরকত, শফিউর, জব্বার-এর পাশাপাশি আলোচক রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালামের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।
চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ের (chapra bangaljhi mahavidyalaya) ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক শক্তি দূতরাজ এদিন তাঁর মাতৃভাষা নেপালিতে ‘জিন্দেগি কো ক্যা ভরোসা’ গানটি পরিবেশন করেন। মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপিকা স্বপ্না রায় এদিন তাঁর মাতৃভাষা ভূমিজ উপভাষায় একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন, যেটির নাম ছিল ‘পাইটি’, যার বাংলায় অর্থ হলো কাজ। মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপিকা সাহানা মণ্ডল কবি আল মামুদের লেখা ‘একুশের কবিতা’ আবৃত্তি করে শোনান। মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ্ত ঘোষ এদিন একুশে ফেব্রুয়ারির পটভূমিতে রচিত কবি গোবিন্দ বিশ্বাসের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান গার্গী সেনগুপ্ত। এভাবেই স্মারক বক্তৃতা এবং নৃত্য, কবিতা প্রভৃতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পালন করেন। এটাই ছিল ২১-এর ভাষা শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊