"আমরা সিপিএম করি তাই ওরা আমাদের বাড়ির জ্বালিয়ে দিয়েছে"
জয়নগরের জোড়া খুনের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। বাড়ির কাছেই মসজিদ আর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জয়নগর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বাইকে করে পাঁচজন দুষ্কৃতী এসে তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এলাকাবাসীরা এরপর এলাকাবাসীদের হাতে এক দুষ্কৃতী পাকরাও হয়। বাকি দুষ্কৃতীরা বেগতিক বুঝে এলাকা থেকে চম্পট দেয়। গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়া দুষ্কৃতিকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশের পক্ষ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই খুনের অন্যতম অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তার নিজের দোষ স্বীকার করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বামুনগাছি গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।গ্রামের পরপর ২০-২৫টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কার্যত দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা গ্রাম। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয়েছিল ধ্বংসলীলা। কিন্তু দমকল কর্মীদের গ্রামে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।যতদূর চোখ যাচ্ছে, ততদূর পর্যন্ত বাড়ি জ্বলছে। বাড়ির বাসিন্দারা চোখের সামনে সর্বস্ব পুড়তে দেখছেন। আগুন নেভানোর কেউ নেই। বাইরে থেকে গ্রামে কেউ ঢুকতেই পারছেন না। গ্রাম পুরুষশূন্য।বালতি নিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে বাড়িতে ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। শুধু মহিলা নয়, ছোট-ছোট শিশুরাও বালতি নিয়ে গিয়ে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।
এলাকারই এক মহিলা বললেন, “আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। যেহেতু আমরা সিপিএম করি সেই কারণে।যে খুন হয়েছে তাঁর সঙ্গে আমাদের গ্রামের কেউ জড়িত নয়। অথচ গ্রামে এসে বলছে সইফুদ্দিনকে আর কেউ খুন করবে না এরাই খুন করেছে।” অর্থাৎ নিতান্তই সন্দেহর বশেই একের পর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গ্রামের আরও এক মহিলা বলেন, “আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। কোনও রাজনীতি করি না। তারপরও ঘরদোর পুড়িয়ে ছাই করেছে। কোথায় থাকব এখন? একটা হাড়ি পর্যন্ত নেই খাবার রান্না করার।”
তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লাও একই কথা বলেন। তিনি বলেছেন, “সিপিএম-বিজেপি আশ্রিত সমাজ বিরোধীরা সইফুদ্দিনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে খুন করে। এর একটাই কারণ যাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়। পুলিশকে বলব যত দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, “কারোর ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে যত দ্রুত সম্ভব খুনিকে খুঁজে বের করা হোক। যথাযথ তদন্ত হোক।”
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊