নিজের প্রাণ দিয়ে বাঁচিয়ে গেছেন সিকিম ও উত্তরবঙ্গের কয়েক হাজার মানুষকে

Dawa Shering Tongden Lepcha




নিজের প্রাণ দিয়ে বাঁচিয়েছেন সিকিম ও উত্তরবঙ্গের কয়েক হাজার মানুষকে, আজ বিধ্বস্ত সিকিমে কান পাতলে তার কথাই শুনতে পাবেন।


হঠাৎ মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে যায় সিকিমের বিস্তির্ণ এলাকা। উদ্ধারকাজ চলছে এখনো। বিধ্বস্ত সিকিম আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে হয়তো। তবে এরই মাঝে পাহাড়ে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে দাওয়া শেরিং তোংডেন লেপচার কথা। তার বীরগাথা আজ সিকিমের মানুষের মুখে মুখে।


সিকিমের সিংতামের বালুটারে তিস্তা-৫ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন দাওয়া শেরিং তোংডেন লেপচা। তাঁর উপস্থিত বুদ্ধিতে শুধু সিকিম বা কালিম্পং নয়, উত্তরবঙ্গের একটি বড় অংশও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। অকাল মৃত্যুর হাত থেকে জীবন বেঁচেছে হাজার হাজার মানুষের। নিজের প্রাণ দিয়ে শতাধিক গ্রামকে রক্ষা করে গিয়েছেন যে দাওয়া, তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছে স্বয়ং সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীও।


গত মঙ্গলবার রাতে লোনাক লেকের জল বাঁধ ভেঙে উন্মত্ত গতিতে আশপাশের সব ধ্বংস করে যখন উদ্দাম জলস্রোত নীচে নামছিল। সেই জলের প্রবল দাপটে নিমেষে ধ্বংস হয়ে যায় লাচেন, লাচুং, চুংথান, সিংথামের মতো এলাকা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের শব্দে দাওয়া শেরিং তোংডেন লেপচার বুকও হয়তো কেঁপে ওঠেছিলো। তবে ভয়ে পালিয়ে যায়নি। নিজের জীবন বিপন্ন হবে জেনেও অসমসাহসী দাওয়া এক এক করে লক গেট খুলতে শুরু করেন । কিন্তু, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ! ৪ নম্বর গেট খুলতে গিয়েই হাইভোল্টেজ তার ওই বিদ্যুৎকর্মীর উপর ছিঁড়ে পড়ে। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন দাওয়া।




জলস্তর দ্রুত নেমে যায়। নতুন সকালের আলো ফুটতেই সকলে বুঝতে পারে দাওয়া আর নেই। দাওয়ার নিথর দেহ পরে আছে।