মা মহামায়া পাঠ থেকে শঙ্খনাদের মাধ্যমে রাখী বন্ধন উৎসবের সূচনা, সমাপ্তি আজানের সুরে
১৯০৫ সালে লর্ড কার্জেন বাংলা ভেঙে দু ভাগ করতে চেয়েছিল।ব্রিটিশদের এই কালাকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখাতে বিশ্বকবি জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি থেকে বাংলাকে এক সুতোয় বেঁধেছিল ভাতৃত্বের বন্ধনে।হিন্দু-মুসলিম-খ্রীষ্টান ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে এক রাখির সুতোয় বেঁধে ফেলে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যাতে করে এই শক্ত রাখির বাঁধন আমাদের প্রেরণা যোগায় বাংলা ভাগ তথা দেশ ভাগের বিরুদ্ধে লড়তে।দেশ-রাজ্যর সাথে সাথে দিনহাটাতে ও শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্ৰতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও রাখীর এই পবিত্র দিনে কবিগুরুকে স্মরণ করে আজ দিনহাটা শহরে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করলো ভারতের ছাত্র ফেডারেশন,ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন ও সারাভারত মহিলা সমিতি।
এই রাখী বন্ধন উৎসবের শুভ সূচনা হয় মা মহামায়া পাঠ থেকে শঙ্খনাদের মাধ্যমে ও সমাপিকা ঘটে মসজিদের আজানের সুরে। এছাড়াও দিনহাটা থানা,মহিলা থানা,দিনহাটা হাসপাতাল ও পথ চলতি সাধারণ মানুষদের মধ্যে রাখী পড়িয়ে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেওয়া হয়।সাথে সাথে মন্দিরের পুরোহিত, মসজিদের ইমাম,দিনহাটা থানার আইসি,মহিলা থানার আধিকারিকের হাতে পরিবেশ সচেতনতার উদ্দেশ্যে ও বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এরই পাশপাশি কদিন আগে দিনহাটা সংহতি ময়দানে যেভাবে নির্বিচারে বৃক্ষছেদন করা হয়েছিল তার প্রতিবাদে আজ সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে দিনহাটা সংহতি ময়দানে বৃক্ষরোপণ করা হয়।শুধু বৃক্ষরোপন নয় আজকের দিনে গাছের গায়ে রাখি বাঁধার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা সকলকে বৃক্ষছেদন না করার বার্তা দেন ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ লাগানো ও গাছের যত্ন করার আবেদন জানান।
উদ্যোক্তারা জানান আজ দিনহাটার আবহাওয়া অশান্ত,যে শহরে আগে সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা চলতো সেখানে এখন ঠেকে ঠেকে প্রমাণ করতে হচ্ছে কে বেশি হিন্দু, কে বড়ো হিন্দু,কে আবার মুসলিম দরদী কে আবার গেরুয়া বেশে সাধু তো কেউ ফেজ টুপি নিয়ে করছে যত কারসাজি। এই ধর্মীয় বিকেন্দ্রিকরণকে রুখতে, ধর্মের নাম অধর্মকে রুখতে আমাদের পথের দিশারী সেই একটি মানুষ,যার সুরে মিলে গেছে 'দ্রাবিড়-উৎকল-বঙ্গ'।তাঁর সুরেই তাঁর ডাকেই মিলে যাবে মানুষ,এই সৌভ্রাতৃত্বে দৃঢ় ডোরে দূর হবে ভেদাভেদের এই অন্ধকার প্রহেলিকা।
আজকের এই কর্মসূচি তে উপস্থিত ছিলেন এসএফআই দিনহাটা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সৌভিক দে,জেলা কমিটির সদস্য সৌরভ সরকার, শুভজিৎ দাস,ডিওয়াইএফআই কোচবিহার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শুভ্রালোক দাস,লোকাল কমিটির সভাপতি উজ্জল গুহ,লোকাল কমিটির সদস্য কৌশিক রায়,ভারতের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুজাতা চক্রবর্তী, মহিলা নেত্রী সুদেবী বর্মন, মুক্তা রায়,দেবযানি মিত্র প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊