লজ্জার দৃশ্য ! মৃত্যুর কার্নিভাল কলকাতার বুকে ! নবম -দ্বাদশ স্তরের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের প্রতিবাদে শোরগোল
চাকরি থেকে বঞ্চিত নবম -দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের চাকরি প্রার্থীরা তিলোত্তমার বুকে মৃত্যুর কার্নিভাল বের করলেন। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা বুকে তীব্র যন্ত্রণা চেপে এই কার্নিভালের আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তাদের বক্তব্য- যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের চাকরি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে যারা প্রকৃত যোগ্য চাকরি প্রার্থী ,তারা নিয়োগপত্র পায়নি। অযোগ্যরা দখল করেছে যোগ্যদের জন্য নির্ধারিত চাকরির ভ্যাকান্সি গুলি।
এদিকে হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতির জন্য মামলা চলছে। চাকরী প্রার্থীদের বক্তব্য নবম -দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক -শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষায় বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতি করা হয়েছে। যেমন সাদা খাতায় চাকরি হয়েছে। হাইকোর্টে সি বি আই এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নবম -দশম স্তরে ৯৫২ জনকে এবং একাদশ -দ্বাদশ স্তরে ৯০৭ জনকে সাদা খাতায় চাকরি দেওয়া হয়েছে তেমনি মেধাতালিকা ভুক্ত সামনের দিকে প্রার্থীদের চাকরি হয়নি কিন্তু সেই তালিকায় অনেক নীচের দিকে থাকা প্রার্থীদের চাকরি হয়েছে। ফলে প্রকৃত যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা নিয়োগপত্র না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তারা জানায়, ২০১৬ সালে প্রথম এস এল এস টি পরীক্ষা হয়। মেধাতালিকা প্রকাশের সাথে সাথেই দুর্নীতির পাহাড় সামনে আসে । ফলে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং স্বচ্ছ ভাবে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে নবম-দ্বাদশের চাকরি প্রার্থীরা কলকাতার প্রেসক্লাবের সামনে ২৯ দিনের অনশনে বসেছিলেন। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের উক্ত অনশন মঞ্চে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে মেধাতালিকা ভুক্ত কোন চাকরি প্রার্থীরা বঞ্চিত হবে না। প্রয়োজনে আইনের কিছু সংশোধন করে হলেও বঞ্চিত যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে।
এই প্রতিশ্রুতির কয়েক বছর কেটে গিয়েছে। এর পরেও আশ্বাসের পর আশ্বাস পেয়েছেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা কিন্তু সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। ২০২২ সালে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রেস কনফারেন্স করে জানিয়েছেন যে সরকার আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের পাশে রয়েছে। বঞ্চিত যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের জন্য সরকার সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে নিয়োগ করবে। কিন্তু নিয়োগ হয়নি।
আদালতে আইনের জটিলতা দেখিয়ে সরকার দিনের পর দিন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ। সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে নিয়োগ করার ক্ষমতা সরকারের এক্তিয়ার ভুক্ত হলেও বিষয়টি নির্ভরশীল সরকারের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু সরকার প্রকৃত সদিচ্ছার অভাবে নবম -দ্বাদশ স্তরের বঞ্চিত যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মৃত্যু যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ৮৯৮ দিন ধরে ধর্ণায় বসে রয়েছেন। সরকার বুঝেও সেটা বুঝছে না এমনটাই অভিযোগ আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের।
বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের বক্তব্য তাদের মৃত্যুর দিকে সরকার কৌশলে ঠেলে দিচ্ছে। মৃত্যু যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বাধ্য হয়ে তারা মহানগরীর বুকে মৃত্যুর কার্নিভাল বের করেছেন। আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের কথায় সরকার নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। তারা জানিয়েছেন যে এই যন্ত্রণা আর সহ্য করা যাচ্ছে না, হয় সুপারনিউমেরারি পোস্টে দ্রুত নিয়োগ, নয়তো এবার মৃত্যু। তারা জানিয়েছেন যে দেশের জনগণের জানা এটা দরকার, যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে এই রাজ্য সরকার।
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের রাজ্য নেতৃত্ব কামরুজ্জামান বিশ্বাসের কথায় "বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের এই করুণ পরিণতির জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। চাকরি প্রার্থীদের জীবনের কোন অঘটন ঘটলে এর জন্য সরকার দায়ী থাকবে।"
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊