১০ বছরে হয়নি কোনো উন্নয়ন! উন্নয়নকেই হাতিয়ার করে সম্মুখ সমরে দুই জা

Election


সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান:-

গত ১০ বছরে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও পড়েনি গ্রামের রাস্তায় এতটুকুও মাটি। চলতি বর্ষা শুরু হতেই জায়গায় জায়গায় রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অথচ যতবারই নির্বাচন আসে ততবারই প্রতিশ্রুতি মেলে পিচ অথবা ঢালাই রাস্তা করে দেবার, পানীয় জলের ব্যবস্থা করার থেকে বার্ধক্য ভাতার মত বিষয় থেকে বাংলা আবাস যোজনার কথাও। কিন্তু কাজ হয়েছে কতটা? আর কতটাই বা করা যাবে? -এনিয়েই দুই জা রীতিমত সম্মুখ সমরে নেমেছে। তাঁদের এই রাজনৈতিক লড়াইকে এখন তাড়িয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন বর্ধমান ২ নং ব্লকের হাটগোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জড়ুল গ্রামের বাসিন্দারা।  



জড়ুল গ্রামের ১৭৪নং বুথে এবার সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন রেণুকা মল্লিক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই জা অপর্ণা মল্লিক। কার্যত এই জড়ুল গ্রাম চিরকালই সিপিআইএমের দুর্গ বলে পরিচিত। এই বুথ থেকে বরাবরই সিপিআইএমের জয়লাভ করার রেকর্ড রয়েছে। সিপিআইএমের প্রার্থী রেণুকা মল্লিকের শ্বশুর লক্ষ্মীনারায়ণ মল্লিক ছিলেন এই গ্রামের সিপিআইএমের নির্বাচিত প্রার্থী। শ্বশুরের পথ অনুসরণ করে এবং সিপিএম প্রার্থী করেছে গৃহবধু রেণুকা মল্লিককে। 



রেণুকা মল্লিক জানিয়েছেন, গ্রামের রাস্তা, জল থেকে অনেক কিছুই আছে যা গ্রামবাসীদের প্রয়োজন তিনি সেই কাজগুলি করার চেষ্টা করবেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরই জা অপর্ণা মল্লিক তাঁর বিরুদ্ধেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। তিনি তাঁর কাছেও আবেদন করেছেন তাঁকে ভোট দেবার জন্য। রাজনৈতিক লড়াইয়ে যুযুধান দুই জায়ের পারিবারিক সম্পর্কেও কি কোনো তার প্রভাব পড়ছে? এর উত্তরে দু জা-ই জানিয়েছেন, কোনো প্রভাব নেই। মঙ্গলবার তাঁদের আত্মীয়ের বিয়ে রয়েছে। দুই জা-ই সেই পারিবারিক অনুষ্ঠানে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে কাজ করছেন। কোনো বিভেদ নেই। দুজন দুটি রাজনৈতিক দলের আদর্শে বিশ্বাসী। তা বলে পারিবারিক ক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাব নেই। পারিবারিক সম্পর্ক আগেও যেমন ছিল এখনও তাই। 



অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী অপর্ণা মল্লিক জানিয়েছেন, গ্রামের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। দিদি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কল্যাণে গ্রামের সমস্ত মানুষের কাছেই উন্নয়ন পৌঁছেছে। তবুও গ্রামের রাস্তা থেকে পানীয় জল সহ কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। তিনি জিতলে সেগুলি তিনি সম্পন্ন করতে চান। গ্রামের মানুষের পাশে সবসময়ের জন্য থেকে কাজ করতে চান। 



অপর্ণাদেবী জানিয়েছেন, জেতার ব্যাপারে তিনি একশো শতাংশ আশাবাদী। এমনকি তাঁর বিপরীতে থাকা তাঁর জা-ও তাঁকেই ভোট দেবেন বলে তিনি নিশ্চিত। এখন দেখার আগামী ৮ জুলাই রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ৭৫০ ভোটারের গ্রাম জড়ুল কোনো জা-কে নির্বাচিত করেন।