পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার জনগণকে ধাপ্পা দিয়েছে: CPIM জেলা সম্পাদক সৈয়দ হাসান
সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান :-
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার জনগণকে ধাপ্পা দিয়েছে। ১৯৭৮ সাল থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য যে রীতি, নীতি পালিত হয়ে এসেছে এবারে তা হয়নি। বিরোধীদের ডাকাই হল না, অথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হয়ে গেল। তা সত্ত্বেও আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ আসনে তাঁরা লড়াই করতে প্রস্তুত। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে একথা জানিয়েছেন সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন।
এদিন বামফ্রণ্টগত ভাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ৬৬টির মধ্যে ৬৫টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। ভাতারের ৩৯টি জেলা পরিষদ আসনে এখনও ঐক্যমত্য না হওয়ায় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। ৬৬টি আসনের মধ্যে ৪টি ফরওয়ার্ড ব্লককে, ১টি আরএসপি এবং ১টি সিপিআইকে ছাড়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য কার্যত প্রতিবারের মত এবারও বামফ্রণ্ট প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ল জোরকদমে।
এদিন সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়েছে, আর শুক্রবারই তাঁরা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিলেন। শুধু তাইই নয়, তিনি এদিন জানিয়েছেন, এদিন জেলার বিভিন্ন ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলেও প্রশাসন মনোনয়নপত্র দিতে পারেনি। তিনি জানিয়েছেন, এদিন কেতুগ্রাম বামফ্রণ্টের প্রায় ৪০ জন গেছিলেন। কিন্তু মাত্র ৭জন মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছেন।
সৈয়দ হোসেন এদিন জানিয়েছেন, জেলার একজন পরিযায়ী শ্রমিক কেরালায় কর্মসূত্রে রয়েছেন। তিনি ভোটে দাঁড়াতে ইচ্ছুক। কিন্তু সেখানকার কোম্পানী তাকে ছাড়ে নি। এদিকে, এদিন সৈয়দ হোসেন অভিযোগ করেছেন, জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে এদিন তাঁরা জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বহু যোগ্য প্রার্থীকে কেবলমাত্র জাতিগত শংসাপত্রের জন্য তাঁরা প্রার্থী করতে পারছেন না। তিনি জানিয়েছেন, ওই সমস্ত প্রার্থীরা দফায় দফায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও পাননি। এব্যাপারে এদিন জেলাশাসকের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপের তাঁরা আবেদন করলেও কোনো ইতিবাচক সাড়া তাঁরা পাননি।
এরই পাশাপাশি তিনি এদিন অভিযোগ করেছেন, যেখানে মনোনয়নপত্র জমা দেবার জন্য মাত্র হাতে ৫দিন সময় দেওয়া হয়েছে সেখানে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য ৪দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের আশংকা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য এই বেশি সময় দেবার একটাই কারণ, শাসকদল হুমকি দিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার যাতে করতে পারে তার রাস্তা পরিষ্কার করা। তিনি জানিয়েছেন, এব্যাপারেও তাঁরা প্রস্তুত রয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সমস্ত বাধা তাঁরা অতিক্রম করবেন।
অপরদিকে, বিধানসভা নির্বাচনের মত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার প্রশ্নে এদিন সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে কয়েকটি ব্লকে জোটের রাস্তা তৈরী হয়েছে। এগুলি হল মঙ্গলকোট, গলসী-১, কেতুগ্রাম -১, জামালপুর, কালনা - ১। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই সমস্ত ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে কিছু আসনের জোটের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলা পরিষদের ৬৬টি আসনের কোনোক্ষেত্রেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের কোনো আলোচনা হয়নি। তবে যদি কোনো সম্ভাবনা থাকে তাহলে প্রয়োজনে তাঁরা এদিনের ঘোষিত বামফ্রণ্ট প্রার্থীদের প্রত্যাহারও করতে প্রস্তুত।
এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক সন্তোষ সাউ, আরএসপির জেলা সম্পাদক স্বপন মালিক, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক ফজলুল হক এবং মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক সওকত আলি, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊