WB SSC: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশের সভামঞ্চের পাশেই ৫৩১ দিন ধরে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ২৯ শে আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ রয়েছে । তাই জোরকদমে সভামঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। পাশেই নবম- দ্বাদশের বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের ধর্ণা অব্যাহত। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসুর আশ্বাসের পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি, বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের ধর্ণা অব্যাহত, পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিয়োগের আর্জি জানাচ্ছেন তারা।
তৃণমূল কংগ্রেস দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আশ্বাসের পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি,নবম- দ্বাদশের হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের ধর্ণা এখনও অব্যাহত।
পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত ২০১৬ সালের প্রথম এস এল এস টি নবম- দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা কলকাতার বুকে ৫৩১ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কবে তারা নিয়োগপত্র হাতে পাবেন? কবে তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে? প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর নেই।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণারত বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা বলেন- "দিনের পর দিন বুকভরা যন্ত্রণা নিয়ে চোখের জল ফেলছেন প্রতিনিয়ত। যে হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের আগামী দিনে জাতির মেরুদন্ড তৈরি করার কথা ছিল, সেই হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ আজও পথের ধারে ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি বাংলার গর্ব না যন্ত্রণা? সাধারণ কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবক, প্রতিবাদী মানুষেরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে , ঘরের মেয়ে ঘরে থাকতে কেন সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, খেটেখাওয়া পরিবার গুলির ছেলে - মেয়েরা বঞ্চিত হয়ে আজ বসতে বাধ্য হয়েছে ধর্ণায়? যদি উন্নয়ন হয় বাংলা জুড়ে , তবে কেন যোগ্য চাকরি প্রার্থীগণ আজ রাস্তার ধারে? কেন তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না?"
তাদের দাবী, বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ মেধাতালিকায় সামনের দিকে থেকেও চাকরিতে নিয়োগপত্র পাননি অথচ ঐ মেধাতালিকায় পিছনের দিকে থাকা বহু চাকরি প্রার্থীদের অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ করেছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন। মেধাতালিকায় কোথাও নাম নেই এমন ফেলকরা বহু চাকরি প্রার্থীদের দুর্নীতি করে নিয়োগ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক এমনটাই অভিযোগ। কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার কথা ছিল,যারা মেধাতালিকায় সামনের দিকে রয়েছে,যাদের নিয়োগ অগ্রগণ্য ছিল তারাই চাকরিতে নিয়োগপত্র পাননি।
আর তাই বুকভরা যন্ত্রণা আর চোখের জল নিয়ে সেই মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরি থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ কলকাতার বুকে ৫৩১ দিন ধরে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে কলকাতার প্রেসক্লাবের সামনে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে এই বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ ২৯ দিন ব্যাপী অনশন করেছিলেন। উক্ত অনশন মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গিয়েছিলেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী অনশনরত বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে মেধাতালিকা ভুক্ত কোনো চাকরি প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হবে না। প্রয়োজনে আইনের কিছু পরিবর্তন করে হলেও তাদের নিয়োগের সুব্যবস্থা করা হবে। সেই আশ্বাসের পরেও বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের সমস্যার সমাধান হয়নি, ফিরে পাননি তাদের ন্যায্য চাকরি।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য সাম্প্রতিক তৃণমূল কংগ্রেস দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের আবার আশ্বাস দিলেও এখন সমস্যার সমাধান হয়নি। বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এখনও ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ধর্ণারত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ চাইছেন। অতি দ্রুত তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক এমনটাই তারা জানিয়েছেন। যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন যে নবম - দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া সকল শিক্ষক-্শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করা হোক। তিনি রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর জরুরীকালীন হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রার্থনা করেছেন। সামনেই দূর্গাপূজা আসছে। আর যেন তাদের বুকভরা যন্ত্রণা আর চোখের জল নিয়ে ধর্ণা মঞ্চে বসে থাকতে না হয়। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর জরুরীকালীন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সকল বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করা হয় এবং হাসি মুখে তারা দূর্গাপূজার আগেই বাড়ি ফিরতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊