রাষ্ট্রপতির দেওয়া পদ্মশ্রী সম্মান পড়ে রয়েছে দিল্লির রাস্তায়


mayadhar raut



৯১ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ ওডিশি নৃত্যগুরু মায়াধর রাউত (Mayadhar Raut)- কে দিল্লির এশিয়ান গেমস ভিলেজের সরকারি আবাসন থেকে উচ্ছেদ করলো কেন্দ্র সরকার। তাঁর কন্যা অভিযোগ তুলেছেন, ৯১ বছরের বৃদ্ধর ফ্ল্যাটে ঢুকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় নৃত্যগুরুর যাবতীয় জিনিসপত্র। এমনকি ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় শিল্পীর (Mayadhar Raut) পদ্মশ্রী সম্মাননার মানপত্রও। ভারতের রাষ্ট্রপতির দেওয়া পদ্মশ্রী সম্মান পড়ে রয়েছে দিল্লির রাস্তায়, এই ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।




সরকারি বাংলো দখলমুক্ত করতে তৎপর কেন্দ্র। আর সেই তালিকায় রয়েছেন একাধিক পদ্ম সম্মান প্রাপক, সঙ্গীত-নাটক অকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্তরা।

রাষ্ট্রপতির দেওয়া পদ্মশ্রী সম্মান




প্রসঙ্গত ১৯৮০ সালে এশিয়াড ভিলেজে এই সব শিল্পীদের একসময় ভাড়ায় থাকতে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এবার ৪২ বছর পর উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে সরকার।




উৎখাত হওয়া শিল্পীদের মধ্যে ৯১ বছরের পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপক ওডিশি নৃত্যগুরু মায়াধর রাউতও (Mayadhar Raut) রয়েছে। দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হন ২০১০ সালে। ওডিশি নৃত্য প্রসারে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া হয়।




গত মঙ্গলবার দুপুরে যখন তাঁকে (Mayadhar Raut) উচ্ছেদ করা হল, তখন রাস্তায় ধুলোয় গড়াগড়ি খায় রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত সেই মানপত্র। এছাড়াও আরও জিনিসপত্র তখন রাস্তায় পড়ে। আর সেই ছবি এখন রীতিমত ভাইরাল নেট দুনিয়েয়। উঠেছে নিন্দার ঝড়।



নৃত্যগুরুর (Mayadhar Raut) মেয়ে মধুমিতা রাউত (madhumita raut) বলেছেন, “দুপুরের খাবার নিয়ে আমরা বসেছি, তখনই আধিকারিকরা আসেন। আজকে আমরা খুব ব্যথিত এবং ভেঙে পড়েছি। দেশের অন্যতম, কিংবদন্তী নৃত্যশিল্পী যেমন সোনাল মানসিং, রাধা রেড্ডিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যিনি আর তাঁকেই এমন নির্মমভাবে ঘরছাড়া করা হল। ৫০ বছর ধরে দিল্লিতে তিনি নাচ শেখাচ্ছেন। তাঁকে এই ভাবে বেঘর করা, এটা প্রাপ্য় ছিল না। তাঁর কোথাও এক ইঞ্চিও জমি নেই। সব নাগরিকেরই অন্তত মৌলিক সম্মানটুকু প্রাপ্য।”




বর্তমানে নিজের ছাত্রীর অভিভাবকের মালিকানাধীন সর্বোদয়া এনক্লেভের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছেন মায়াধর ও তাঁর মেয়ে।




জানাযায় সাতের দশক থেকে ৪০-৭০ বছর বয়সী শিল্পীদের সাধারণ ভাড়ায় তিন-চার বছরের জন্য সরকারি ঘর ভাড়ায় দেওয়া হয়। পরে সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়। তবে গত ২০১৪ সালে সেই বর্ধিত সময়সীমাও পার হয়ে যায়। এরপর সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে শিল্পীদের বার বার চিঠি পাঠানো হয়।




আবাসন এবং পুর বিষয়ক মন্ত্রক দুবছর আগে বাড়িগুলি খালি করার নোটিস দেয়। এঁদের মধ্যে কত্থক সম্রাট বিরজু মহারাজ, ধ্রুপদ শিল্পী ওয়াসিফুদ্দিন দাগার, কুচিপুরী গুরু জয়ারামা রাও এবং মোহিনীআট্টম শিল্পী ভারতী শিবাজি এই নোটিসের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন।



দিল্লি হাইকোর্ট মানবিক দিকে থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিতে বলেছিল। সেই সময়ও পেরিয়ে গেছে। এবার তাঁদের ঘর খালি করতে বলা হয়েছে।



মধুমিতা জানিয়েছেন, সরকারি এই আবাসনের লিজের মেয়াদ ২০১৪ সালে শেষ হলেও তাঁদের বিষয়টি জানানো হয় ২০২০ সালে। তিনি বলেন, উচ্ছেদ নিয়ে তিনি কোনো আপত্তি করছেন না কিন্তু যেমন অমানবিক ভাবে এই প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে তাতে তিনি হতবাক।


[সংবাদ একলব্য সংবাদটি সম্পাদনা করেনি সরাসরি নিউজফিড থেকে সংগৃহীত।]