কর্তব্যরত ট্রাফিক অফিসারকে হুমকি দিয়ে বাইক ছাড়িয়ে নিয়ে গেল তৃণমূল নেতার ভাইপোর ছেলে!

Dhupguri




ধূপগুড়ি ,২১মার্চ,  জয়ন্ত বর্মন: 


ধূপগুড়ি ট্রাফিক গার্ডের অফিসে হিন্দি গানের তালে অর্ধনগ্ন অবস্থায় নাচতে দেখা গেল পুলিশ কর্মীদের। আর এবার সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর কড়া নজরদারি চালাবেন এও জানা গেছে। গতকাল নাচানাচির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর চব্বিশ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও এবিষয়ে মুখ খোলেননি জেলা পুলিশ সুপার সহ কর্তারা। তবে সোমবার সকালে ধূপগুড়িতে অবস্থিত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) এর দপ্তরে এদিন ট্রাফিক গার্ডের ওসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে খবর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াংদেন ভূটিয়া বলেছেন থানা ভবনের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




তবে তদন্ত কবে শেষ হবে এবং পুলিশ রুল বুক অনুযায়ী কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় আরেকটি ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় শহরে। সোমবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ধূপগুড়ি চৌপথি মোড়ে হেলমেটহীন দুই বাইক আরোহীকে আটক করা হলে ট্রাফিক কর্মী ও আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে পথ অবরোধ করে বাইক ছিনিয়ে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক। ঘটনায় প্রায় পনেরো মিনিট যান চলাচল আটকে যায় এশিয়ান হাইওয়ে সহ শহরের কলেজ রোড এবং ডাউকিমারি রোডে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামেন ভাইরাল ভিডিও কান্ডে খালি গায়ে নাচতে দেখা যাওয়া ধূপগুড়ি ট্রাফিক গার্ডের ওসি অভিজিৎ সিনহাকে। কিন্তু তাকেও নানা কুকথা বলতে শোনা যায় ঐ যুবকদের। এরপর ট্রাফিকের আটক করা বাইক জোড় পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায় ঐ যুবকরা।




জানা গেছে জাতীয় সড়ক অবরোধ এবং ট্রাফিক কর্মীদের থেকে বাইক ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মূল তিন অভিযুক্তই তৃণমূল নেতাদের নিকট আত্মীয়৷




সূত্রে খবর মূলত শাসক দলের নেতা নেত্রীদের নিকট আত্মীয় হওয়াতেই ট্রাফিক কর্মীরা জাতীয় সড়ক অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা উলটে ভয়ে আটক করা বাইক ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে কেন এমনটা আইন যখন সবার জন্য সমান হয় তাহলে শাসক দলের নেতা সেকি আইনের মধ্যে পড়ে না তার দিকে কেন ছাড় কেনই বা হবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।




জানা গেছে এই ঘটনায় নাম জড়ানো পুস্পজিৎ রায় এবং ইন্দ্রজিৎ পাল তৃণমূল নেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়ের নিকট আত্মীয় এবং আরেকজন অরুনাভ চক্রবর্তী তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অনিল চক্রবর্তীর ছেলে। শাসকদলের নেতা নেত্রীদের পরিবারের সদস্য বলেই এদের বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ বিরোধী ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যাক্টে স্যুয়ো মোটো মামলা দূরের কথা এমনকি ভয়ে বাইকটিও ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এই যুবকরা ঘটনাস্থলে হাজির সাংবাদিকদেরও গালাগাল করে বলে অভিযোগ। যদিও এবিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছেন খোদ শাসকদলের নেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়। তিনি বলেন, পরিচয়ে যাই হোক না কেন কেউ আইন বিরুদ্ধ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে পুলিশ অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেবেন৷



জাতীয় সড়ক অবরোধ এবং বাইক ছিনিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে সমর্থন করেন না বলেই মন্তব্য করেছেন ধূপগুড়ি টাউন ব্লক সভাপতি সাগ্নিক দাস। তিনি বলেন, বিষয়টি বিস্তারিত জানিনা তবে আইন তার নিজস্ব পথেই চলবে। কেউ যেন নিজেকে আইনের উর্ধে মনে না করেন। আইন রক্ষায় আমরা আপোষহীন অবস্থানে রয়েছি।