আদিবাসীদের (Tribles) জমি (Land) জালিয়াতি করে নিয়ে নিচ্ছে জমি মাফিয়ারা, তদন্তে নামলো জেলা প্রশাসন

জমি মাফিয়া



রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, আসানসোল: দীর্ঘদিন ধরেই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্যে জেরবার হয়ে উঠেছে আসানসোল। আর এবার জাসালানপুর ব্লকের কল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মনহারা গ্রামে মনহারা মৌজার মধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিঘা পর বিঘা জমি জালিয়াতির ঘটনা সামনে এলো। আর এই ঘটনায় অভিযোগের তির সেই জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর থেকে জানা যায় বগলা মাঝি ও লানগী কিস্কু,সুংলী মেঝান নামক তিন ব্যাক্তির জমি তার পরিবারের সদস্যরা বিক্রি না করেই রবিন মুর্মূ ও চাঁদ মুর্মূ নামক ব্যাক্তির নামে রেকর্ড হয়ে যায়।আর এর পিছনে রয়েছে কিছু শক্তিশালী ব্যাক্তি ও জমি মাফিয়াদের হাত বলে এমনটাই অভিযোগ।

পাশাপাশি আরো জানা যায় এইসব জমি গুলি ইসিএল কয়লা খনিটি সমপ্রসারণ করার জন্য এই সব জমি চিহ্নিত করছে। আর সেই জমিই এবার মাফিয়াদের নজর পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সালানপুর ব্লকের মধ্যে এমন ঘটনা কোনো নতুন নয়। তবে জমি মাফিয়াদের হাত এত বড় যে তাদের কোনো শাস্তি হয়না।

এই প্রসঙ্গে মৃত বগলা মাঝির পরিবারের সদস্য অরুন সোরেন জানান, এই জমি তার মৃত কাকিমা বগলা মাঝির নামে নথিভুক্ত আছে। এত বছর ধরে ওই জমির খাজনা এবং জমিতে চাষ তারা করে এসেছে। এখন যখন ইসিএল এই জমি গুলি চিহ্নিত করেছে তখন তারা অনলাইনে মধ্যে জমির রেকর্ড সার্চ করে দেখতে পায় তার ৭৬১ ও ৬৬৭ দাগের প্রায় ৬৬ শতক জমি অন্য কারও নামে চেপে গেছে। সে জানতে পারে অবিনাশ সোরেন নামক এক ব্যাক্তি জালি জমির কাগজ বানিয়ে কল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্যাডে ফ্যামিলি চাট বানিয়ে রবিন মুর্মূ নামক এক ব্যাক্তি কে বিক্রি করে দিয়েছে।আর এই খবর জানা মাত্রই ওই ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সালানপুর বিএলআরও দপ্তরে। পাশাপাশি বিএলআরও তার জমি তদন্ত করে ফেরত দেয়।

এই প্রসঙ্গে মৃত লানগী কিস্কুর পরিবারের সদস্য মালতি কিস্কু জানান মনহারা মৌজার মধ্যে ৫৯২,৬০১,৬৯৩,৭৫৮,৭৬৯ দাগে তার দিদিমা লানগী কিস্কুর নামে প্রায় ১ একর ৯৬ শতক জমি রয়েছে সেই জমি জালিয়াতি করে কল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী চাঁদ মুর্মুর নামে রেকর্ড করে দেওয়া হয়।তাছাড়া আবার পঞ্চায়েত থেকে জালি একটা ফ্যামিলি চার্ট বানানো হয়। তিনি আরো জানান তারা এই জালিয়াতি ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানা ছিলো তবে গ্রামের মানুষের কাছে তিনি জানতে পেরেছে তাই এখন সালানপুর ভূমি দপ্তরে গিয়ে অভিযোগ করা হয়নি তবে তিনি লিখিত অভিযোগ করবেন।তিনি আরো বলেন তারা আদিবাসী বলে তাদের সাথেই এই জালিয়াতি গুলি করতে পারে সবাই,তার বক্তব্য কে বা কারা তাদের সাথে ছল করলো তার বিচার চাই।

এই প্রসঙ্গে মৃতু সুংলী মেঝান এর পরিবারের সদস্য বিনা পানি কিস্কু বলেন মনহারা মৌজার মধ্যে ৫৮১খতিয়ানে মোট ৩০টি দাগে পঞ্চায়েত থেকে মিথ্যা একটি ফ্যামিলি চাট বানিয়ে ২একর ৬ শতক জমি।

জমি মাফিয়ারা জালিয়াতি করে রবিন মুর্মুর নামে রেকর্ড করে দেয়,তিনি জানান তারা শিক্ষিত নয় বলে তাদের সাথে এই জালিয়াতি করা হয়েছে। তিনি জানান তার জমি অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।