শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার গৃহবধূর দেহ, আটক শশুর ও শাশুড়ি
রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী :- মাত্র তিনমাস আগেই বারাবনি থানার অন্তর্গত পানুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলবেরিয়া গ্রামের কৃষ্ণ ওরফে দীপক মন্ডলের সঙ্গে বিবাহ হয় ১৯ বছর বয়েছি তারা মন্ডলের। আর বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই শ্বশুরবাড়ির ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হলো সদ্য বিবাহিতা তারার দেহ।
এঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকালে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মৃতার শ্বশুরবাড়ী পারুলবেরিয়া গ্রামে। এদিকে এঘটনার পরেই মৃতার পিতা যাদব গড়াই অভিযোগ করেন তার মেয়ের উপর প্রায়ই অত্যাচার চালাতো তার শশুর বাড়ী লোকেরা। এই নিয়ে অনেকবার সংসারে মিটমাটও করা হয়েছে। কিন্তু এবারে তার মেয়েকেই মেরে ফেলল তারা। সূত্রের খবর এদিন ভোর চারটে নাগাদ মৃতার শ্বশুর বাড়ি থেকে গৃহবধূর বাবাকে ফোনে জানানো হয় যে, আপনার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ, তাই আপনারা তাড়াতাড়ি চলে আসুন।
আর সেই খবর পেয়ে মৃতা তারা মন্ডলের বাবা যাদব গড়াই বেলা বারোটা নাগাদ মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে দেখেন যে, তার মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে। আর এর পরেই তিনি খবর দেয় তার আত্মীয়দের। পাশাপাশি এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকেও খবর দেওয়া হয় বারাবনি থানাতে। আর খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনা স্থলে ছুটে যায় বারাবনি থানার পুলিশ।
দুপুর একটা নাগাদ পুলিশ মৃতার শশুর বাড়ী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এদিকে মৃত দেহের পাশ থেকে একটি চামড়ার বেল্ট উদ্ধার করেছে পুলিশ।এদিকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান ওই গৃহবধূকে বেল্টের সাহায্যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এদিকে মেয়েকে খুনের অভিযোগে মৃতা তারা মন্ডলের বাবা যাদব গড়াই বারাবনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়েক করেন। আর এর পরেই মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতার শ্বশুর মধুসূদন মন্ডল ও শাশুড়ি মেনকা মন্ডলকে আটক করে। পাশাপাশি তার স্বামী কৃষ্ণ ওরফে দীপক মন্ডল ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যায়। তার খোজেও ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর গত ৮ মে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার বৃন্দাপাথরের বাসিন্দা তারা গড়াইয়ের সঙ্গে আসানসোলের বারাবনি ব্লকের পানুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলবেড়িয়া গ্রামের দীপক মন্ডল ওরফে কৃষ্ণের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বাপের বাড়ি থেকে পন হিসাবে নগদ টাকা সহ অন্যান্য জিনিস পত্রও দেওয়া হয়। তারা মন্ডলের বাবা এদিন অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের মাস খানেক যেতে না যেতেই মেয়ের উপর তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি অত্যাচার করতো। এদিকে তদন্তের জন্য প্রথমে মৃতার শশুর ও শাশুকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাদের গ্রেপ্তার করে। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর পুলিশের পক্ষ থেকে আগামী কাল ধৃতদের আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করবে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে আদালতের কাছে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের আর্জি জানাবে পুলিশ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊