এক এক করে মাটি থেকে উঠে এলো প্রায় ৩ শ বছর আগের ৩৪ টি মটকা

৩০০ বছরের পুরানো মটকা



ঘটনাটি পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পাথরঘাটার ১১৮ হাজী নজুমিয়া লেনে অবস্থিত এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর বাড়িতে। যা দেখতে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষজন।

জানাযায়-চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছিলেন হাজী শরীয়ত উল্লাহ। তৎকালীন বার্মার (মায়ানমার) রাজধানী রেঙ্গুনের সঙ্গে ব্যবসা ছিল তার। নিজের দুটি জাহাজযোগে মালামাল নিয়ে যেতেন রেঙ্গুনে, একইভাবে ফিরেও আসতেন। প্রায় ৩০০ বছর আগে ১২ শতক জায়গার উপর এই বাড়িটি তিনিই তৈরি করেছিলেন।

হাজী শরীয়ত উল্লাহর চতুর্থ প্রজন্ম মোহাম্মদ ফারুক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমার ফুফু অনেক আগে আমাদের বলেছিলেন এই বাড়িটি মটকার উপর তৈরী করা হয়েছে। এই মটকা ও বাড়ি তৈরীর শ্রমিকও আনা হয়েছিলো রেঙ্গুন থেকে। ভবনটি নির্মাণ করতে সে সময়ের ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল। এখন বাড়ি ভাঙতে গিয়ে তার কথার মিল পাচ্ছি।"

প্রথম দেখাতেই যে কারো মনে হতে পারে সারি সারি 'মটকা'য় (এক ধরনের কলস) মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছে গুপ্তধন। কিন্তু তা নয় আসলে ওই মটকাগুলোর উপরই গত তিনশ বছর দাঁড়িয়েছিলো কয়েক হাজার টন ওজনের একটি বাড়ি!


এখন পর্যন্ত শ্রমিকরা ওই ভবনের নিচ থেকে ৩৪টি মটকা উদ্ধার করেছে। অধিকাংশ পাত্রের উচ্চতা গড়ে দুই ফুট। মুখের ব্যস ৫৬ ইঞ্চি। একেকটি পাত্রের ওজন ১০ থেকে ১৫ কেজি। ধারণা করা হচ্ছে বাড়ির ভিতের নিচে এখনো অন্তত ২৫০টি মটকা রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক এ কে এম. সাইফুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "পুরো বাড়ি ও মটকাগুলো দেখে মনে হয়েছে এটা প্রায় তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ বছর আগের স্থাপত্যশৈলী। এর আগে মুন্সিগঞ্জের ইন্দ্রাকপুরে একটি দুর্গে এভাবে কলস ব্যবহার করা হয়েছে। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রতিনিধি মীর জুমলা খাঁ দুর্গ তৈরিতে এভাবে মটকা ব্যবহার করেছিলেন। প্রাথমিক দেখায় মনে হয়েছে ভূমিকম্প নিরোধ ও বাড়িকে ঠান্ডা রাখতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। আরও পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর বিস্তারিত বলা যাবে।"