Ambubachi 2021: আজ থেকে পৃথিবীর ঋতুকাল ‘অম্বুবাচী’, জেনে নিন সম্পূর্ণ নির্ঘণ্ট




অম্বুবাচী কথাটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ 'অম্ব' ও 'বাচি' থেকে। 'অম্ব' শব্দের অর্থ হলো জল এবং 'বাচি' শব্দের অর্থ হলো বৃদ্ধি। অতএব গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহের পর যখন বর্ষার আগমনে ধরিত্রী সিক্ত হয় এবং নবরূপে বীজধারণের যোগ্য হয়ে ওঠে সেই সময়কেই বলা হয় অম্বুবাচী।

রঘুনন্দন ভট্টাচার্য তাঁর 'অষ্টবিংশতি' তত্ত্ব নামক গ্রন্থে তিথিতত্ব ও কৃত্যতত্বে অম্বুবাচি ও তার স্থিতিকাল নিয়ে লিখেছেন -
"যস্মিন বারে সহস্রাংশু যতকালে মিথুনং ব্রজেত।
অম্বুবাচি ভবে ন্নিতং পুনঃস্থকাল-বারয়ঃl"
অর্থাৎ, সূর্য আষাঢ় মাসে যে দিন যে সময়ে মিথুন রাশিতে আদ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদে গমন করে সেই সময়কাল থেকে মাতৃস্বরূপা পৃথিবী এবং আদ্যাশক্তি মহামায়া ঋতুমতী হয় বা অম্বুবাচির কাল শুরু হয় ।



"তাবত্কালোবধি-বিংশতিদন্ডাধিক্ দিনত্রয়ম"
অর্থাৎ, সূর্যের মিথুন রাশি গমনের কাল থেকে শুরু করে বিংশতিদন্ডাধিক্ তিনদিন বা তিনদিন কুড়িদন্ড কাল সময় অম্বুবাচির স্থিতি।

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে– অম্বুবাচী প্রবৃত্তি (শুরু)– বাংলার– ৭ আষাঢ়, মঙ্গলবার। ইংরেজি– ২২ জুন, মঙ্গলবার। সময়– রাত ২টো ০৫ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড। অম্বুবাচী নিবৃত্তি (শেষ)– বাংলা– ১০ আষাঢ়, শুক্রবার। ইংরেজি– ২৫ জুন, শুক্রবার। সময়– রাত ২টো ২৮ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

এই দিনগুলিতে আমাদের কর্তব্য দেবীকে বিশেষভাবে যত্নে রাখা। এমন ধারণা ঠিক নয় যে দেবী এইসময় অশুচি বা অস্পৃশ্যা হয়ে যান। সাধারণতঃ কাপড় দিয়ে মাতৃবিগ্রহ ঢেকে রাখার যে প্রচলিত প্রথা আমরা দেখতে পাই তা সাধারণের জন্য পালনীয় নয়। অনেকে এই সময় মায়ের নিত্যসেবাও বন্ধ করে দেন, এটিও একেবারেই ঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টির নিমিত্তে দেবী এই সময় যোগনিদ্রায় মগ্ন থাকেন, সেই কারণে এই সময় দেবীকে স্পর্শ করা উচিত নয়। উপরন্তু যথাসম্ভব একান্ত পরিবেশে নির্জন বাসের ব্যবস্থা করা উচিত। 




কোনভাবেই আমাদের কোন আচরণে মায়ের বিরক্তির উদ্রেক যেন না হয় সেদিকে সর্বদাই খেয়াল রাখতে হবে। সংকল্প বিহীন নিত্য পূজাপাঠ ও আচার অনুষ্ঠান যথাসম্ভব অনাড়ম্বর ভাবে পালন করা উচিত। কিন্তু এই সময় বেশী করে জপ-ধ্যান ইত্যাদি করা উচিত। এই কালে জপ করলে বহুগুণ ফল লাভ হয়। উচ্চৈঃস্বরে মন্ত্রপাঠ, ভজন এবং ঘন্টা-কাসর, ঢাক-ঢোল ইত্যাদি বাজানো এই সময় বর্জনীয়। ভূমি কর্ষণ বা ভূমিতে কোনরকম আঘাত করা এবং ক্ষৌরকর্ম ইত্যাদি এই তিন দিন নিষিদ্ধ। সকল সাধক ও ভক্তগণেরই এই সময় সংযত জীবনযাপন করা একান্ত কর্তব্য।

সারাবছর জগতজননী মা আমাদেরকে আগলে রাখেন, সব রকম দেখাশোনা করেন। তাই এই তিনটে দিন আমাদেরও উচিত মায়ের একটু খেয়াল রাখা, একটু যত্ন নেওয়া।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
সংবাদ একলব্য সংবাদটি সম্পাদনা করেনি