আমার ছেলে নির্দোষ, আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে-ইংরেজিতে মাস্টার্স সৌমাল্যর বাবা

আমার ছেলে নির্দোষ, আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে-ইংরেজিতে মাস্টার্স সৌমাল্যর বাবা 





রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী: পশ্চিম বর্ধমান: ছেলে চুরি করে থাকলে সাজা হোক, এমনই চাইছেন পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার এমএ পাশ চোর সৌমাল্য চৌধুরীর বাবা। শনিবার হাওড়ায় একাধিক চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সালকিয়া থানার পুলিশ। যদিও আসানসোলের বাসিন্দা সে। সোমবার সৌমাল্যর বাবা সাংবাদিকদের জানান, এর আগেও চুরির অভিযোগে ছেলেকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে তার সাজা হোক। 

সোমবার আসানসোলের কোর্টমোড়ে বহুতল আবাসনের দোতলায় সৌমাল্যদের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায় নেমপ্লেটে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। বেল বাজাতে দরজা খোলেন সৌমাল্যর বাবা সুনীলবাবু।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এর আগেও চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল সৌমাল্য। গভীর রাতে বাড়িতে এসে তাঁকে গ্রেফতার করেন আসানসোল থানার ওসি। ছেলের গ্রেফতারির পরদিনই আত্মঘাতী হন মা মধুছন্দা চৌধুরী।

গতকাল পুলিশের জালে ধরা পড়ে এম এ পাশ চোর, আসানসোলের বাসিন্দা সমাল্যা চৌধুরী। গতকাল একটি চুরির কিনারা করতে গিয়ে হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে চুরির মূল পান্ডা সৌমাল্য চৌধুরীকে।

সৌমাল্য পড়াশোনা জানা ছেলে। পড়াশোনা বলতে ইংরেজিতে এমএ। কিন্তু সেই ছেলে কোনও ভদ্রস্থ কাজ বেছে নেওয়ার পথে হাঁটেনি। লোকাল ছেলেদের খপ্পরে পড়ে হাত পাকানো শুরু করে এই ধরনের কাজে বলেই স্থানীয়দের দাবি। ছেলের এই স্বভাবের কারণে মা আত্মহত্যা করলেও চুরির নেশা ছাড়তে পারেনি। সে চুরিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে ফের পুলিশের জালে ধরা পড়ে সে। 

হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে আসানসোলের বাসিন্দা মূল পান্ডা সৌমাল্য চৌধুরী সহ মোট তিনজনকে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় দশ লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার গহনা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সৌমাল্য চৌধুরী ইংরেজিতে এম এ পাস। ২০১৫ তে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেছিল সে। কিন্তু চুরি করাই তার নেশা।এটাকে পেশা হিসেবেই বেছে নেয় সে। বাড়ি ছেড়ে চুরির চক্র গড়ে তোলে সে। আসানসোল হাওড়া হুগলী জেলায় কমপক্ষে কুড়িটি চুরির ঘটনার সাথে যুক্ত। 

তার বাবা প্রাক্তন সরকারি অফিসার। মা ছিলেন শিক্ষিকা। ছেলের কুকীর্তির কথা জানতে পেরে তিনি আত্মহত্যা করে। এতেও শোধরায়নি সৌমাল্য। চুরি করাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেয়। 

অন্যদিকে সৌমাল্যা চৌধুরীর বাবা সলিল চৌধুরী বলেন,ছেলের সমস্ত কথাবার্তা তার মায়ের সাথেই হতো। ব্যাংকের টাকা পয়সা আদানপ্রদান সৌমাল্য করত। ইদানিং কিছু লোকাল ছেলেদের খপ্পড়ে পড়ে এই ধরনের কাজ করতে শুরু করে। সেই ছেলেরা ভুল পথে চালিত করে নিজেদের দলে টেনে নেই, পরে তাকে খুনের হুমকি দিয়ে সমস্ত ব্যাংকের টাকা বের করে নেই তারা। ছেলে তাদের সমস্ত টাকা পয়সা মানসম্মান সবকিছুই উড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা তুলে নেই তারা। তবে সেই সঙ্গে সৌমাল্যার বাবা সলিল চৌধুরী বলেন,আমার ছেলে নির্দোষ, আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।

Post a Comment

thanks