গতবছরের বিষন্নতা কাটিয়ে স্বভাবিক ছন্দে কেশিয়াড়া শিবের গাজন


রঞ্জিত ঘোষ,বাঁকুড়া,১৩ এপ্রিল:


বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ আর এই তেরো পার্বণের এক পার্বণ হল চৈত্র সংক্রান্তির শিবের গাজন । যা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে নিয়ে আসে এক আনন্দ বার্তা । একদিকে যেমন শৈব ভক্তরা নিজ গোত্র ত্যাগ করে শিবের গোত্র ধারণ করে,অপরদিকে তেমনই পুরাতন বছরের বিদায়ের সাথে নববর্ষের সূচনা ঘটে । রাজ্যজুড়ে আজ থেকে শুরু হল শিবের গাজন। সেই মতো বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটির কেশিয়াড়া গ্রামেও গত বছরের বিষন্নতা কাটিয়ে মহাসমারোহের সাথে শুরু হল শিবের গাজন । 



প্রায় বেশকয়েক শতাব্দী ধরেই এখনে প্রতিবছর চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয় । কিন্তু গতবছর এখানে করোনা পরিস্থিতির জন্য গাজন স্থগিত রাখা হয়েছিল, ফলে গ্রাম জুড়ে ছেয়েছিল বিষন্নতার ছায়া । কারণ এই গাজনকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন ব্যবসা করার মধ্যমেই একটা বাড়তি আয়ের সুযোগ ঘটে এলাকার মানুষদের । এবার আর বিষন্নতা নয়, বাড়তি আয়ের সুযোগ পেয়ে বরং এক প্রকার প্রসন্নই হয়েছে এলাকাবাসি। এই মেলায় এসে 'কদমা' কেনেনা এমন জুড়ি মেলা ভার ।


এখানে চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে গাজনের মূল পর্ব শুরু হলেও তার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয় ভক্তাদোলের পর্ব । ২ রা বৈশাখ পর্যন্ত চলে মেলা । শতশত শৈব ভক্তরা মনস্কাম নিয়ে ছুটে আসে এই শিবমন্দিরে। হোমের দিন রাত্রিবেলা শৈব ভক্তরা নানারকম নিয়মকানুন যেমন আগুন খেলা, লাঠিখেলা করে থাকে । তার পরদিন হয় চড়ক পুজো,তারপর মেলা এগোতে থাকে পরিসমাপ্তির দিকে এবং ২রা বৈশাখ প্রসাদ বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় কেশিয়াড়া শিবের গাজন ।