আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকর্মীর সুনিশ্চিত নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দাবীতে ডেপুটেশন




আর কিছুদিনের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ২০২১, অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভােট কর্মীদের সম্মান ও নিরাপত্তাহীনতা আজও যে ভোটকর্মীদের আতঙ্কিত করে রেখেছে, তা পরিষ্কার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের দাবীপত্র প্রদানের মধ্যে।

প্রসঙ্গত প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় উত্তর দিনাজপুর জেলার রহৎপুর হাই মাদ্রাসার তরুণ শিক্ষক রাজকুমার রায়ের করুণ পরিণতি  শুধু  নয় সেদিন সারা রাজ্যে অসংখ্য ভােটকর্মী শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার শিকার হয়েছিল- সে ছবি সারা রাজ্যের মানুষ দেখেছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে  ভােটকর্মীরা  খুবই আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক- শিক্ষাকর্মী- শিক্ষানুরাগী  ঐক্যমঞ্চ। 



এই পরিস্থিতিতে ভোটকর্মীরা যাতে সাংবিধানিক দায়িত্ব মর্যাদার সাথে পালন করতে পারেন তার জন্য জীবনের সুনিশ্চিত নিরাপত্তাসহ কয়েকদফা দাবিপত্র জমা করেন প্রতিটি ভোট কর্মী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডিসট্রিক্ট রিটার্নিং অফিসার/ ডি এম-কে।  

ভোটকর্মীদের বিভিন্ন দাবি গুলি হল-

১) রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিটি ভােট কর্মীর জন্য সুনিশ্চিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং তার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। 

২) প্রতিটি বুথে প্রিজাইডিং অফিসারের সহিত ৬ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী(সেন্ট্রাল ফোর্স) দিয়ে ভােটার এবং ভােট কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। 

২) স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দ্বিগুণ হারে এই নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

৩) রিলিভারের জন্য প্রতিটি বুথে একজন করে অতিরিক্ত ভােটকর্মী দিতে হবে।

৪) ভােটকর্মী হিসাবে দায়িত্ব পালনের পূর্বে সমস্ত ভােট কর্মীর জন্য প্রতিষেধক কোভিড ভ্যাকসিন টিকাকরণ সুনিশ্চিত করতে হবে। 

৫) ডিউটি থাকা অবস্থায় হিংসাত্মক কোন ঘটনায় ভােট কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা আর সাধারণ মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে এবং পরিবারের একজনকে চাকুরি দিতে হবে। 

৬) হতাহতের জন্য আগে থেকে প্রতিটি ভােট কর্মীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। 

৭) ভােট গ্রহণের শেষে ভােট বাক্স জমা দেওয়ার পর রিলিজ অর্ডার দিয়ে দিলেই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। ভােট গ্রহণের জন্য ভােট কর্মীদের বাড়ি থেকে বাহির হওয়ার পর থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত তাঁর জীবনের সমস্ত নিরাপত্তার ভার নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। 

৮) কোভিড পরিস্থিতিতে ভােট কর্মী এবং ভােটারদের সুরক্ষিত রাখার জন্য সমস্ত রকম উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

৯) প্রতিটি বুথে ভােট কর্মীদের থাকা, খাওয়া ও সঠিকভাবে ভােট গ্রহণ প্রক্রিয়া পরিচালনার উপযুক্ত পরিকাঠামাের ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

১০) প্রিজাইডিং অফিসারের অভিযােগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তৎক্ষণাৎ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

১১) ভােটিং মেটেরিয়ালস জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফেরার জন্য উপযুক্ত যানবাহন যথেষ্ট পরিমাণে রাখতে হবে।

১২) ইচ্ছুক ভােট কর্মীদের কভিড-১৯ প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দিতে হবে। 

১৩) প্রতিবন্ধীদের ভােট কর্মী হিসাবে নিয়ােগ করে তাঁদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। 

১৪) বুথ ভিত্তিক নয়, পােস্টাল ব্যালট বিধানসভা অনুযায়ী একসাথে মিশিয়ে গননা করতে হবে। 

শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী জানিয়েছেন- "দাবিগুলি পূরনে সুনিশ্চিত প্রতিশ্রুতি না পেলে আমরা রাজ্য জুড়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবাে এবং প্রয়ােজনে আমারা আমাদের ভােটকর্মীর দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হবাে।"