করোনা মহামারীর কালেও বড্ড প্রাসঙ্গিক স্বামী বিবেকানন্দ


স্বামী বিবেকানন্দ



বিশ্বজিৎ দাস:-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে অনেক আগেই এবং এই ভাইরাসের কবলে পড়ে কমপক্ষে ১৯ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই মারা গেছেন এবং পৃথিবীজুড়ে ৮ কোটি ৯৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এই মারণ ভাইরাসে। ১৫৮ তম স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালেও তিনি আজও সমান ভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ আমাদের কাছে।




তবে করোনা মহামারীর সময়ে জরুরী অবস্থা পুরো ভারত বা বিশ্বজুড়ে নতুন নয়।১৮৯৯ সালের বেঙ্গল প্লেগ এবং স্বামী বিবেকানন্দের 'প্লেগ ম্যানিফেস্টো' স্মরণ করলে যা কেবল আমাদের মানসিকভাবে সহায়তা করে না বরং মানসিকতার বিকাশও ঘটায়। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর 'প্লেগ ইশতেহার' চিঠিটিও বাংলা ও হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন এবং স্বামী সদানন্দের কঠোর পরিশ্রম দ্বারা জনসংখ্যার একটি বৃহত্তর অংশে পৌঁছেছিলেন।





স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন “মনকে সর্বদা প্রফুল্ল রাখুন। সবাই একবার মরে যাবে। কাপুরুষরা কেবল নিজের মনের ভয়ের কারণে বার বার মৃত্যুর যন্ত্রণায় ভুগছে।"তিনি এই ভয়কে দূরে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।"আসুন, আমরা এই মিথ্যা ভয় ছেড়ে দিতে পারি এবং ঈশ্বরের অসীম করুণায় বিশ্বাস রেখে, আমাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করুন। আসুন আমরা শুদ্ধ ও পরিষ্কার জীবনযাপন করি। রোগ, মহামারী ইত্যাদির ভয়  একদিন আপনাদের ইচ্ছেশক্তির কবচের কাছে বাতাসে বিলীন হয়ে যাবে। ''




তিনি সেই সময়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ভালোভাবে থাকতে বলেছেন। তিনি বলেছিলেন ’’ঘর এবং তার চত্বর, জামাকাপড়, বিছানা, ড্রেন ইত্যাদি সর্বদা পরিষ্কার রাখুন। বাসি, নষ্ট হওয়া খাবার খাবেন না; পরিবর্তে তাজা এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। একটি দুর্বল শরীর রোগের জন্য বেশি সংবেদনশীল। মহামারী চলাকালীন সময়ে, রাগ এবং লালসা থেকে বিরত থাকুন।" তিনি আতঙ্কিত হয়ে গুজবে কোনও কান না দেওয়ার জন্যও বলেছিলেন।




কলকাতায় প্লেগ মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিল ১৮৯৯ সালের মার্চ মাসে। রামকৃষ্ণ মিশন সেক্রেটারি হিসাবে সিস্টার নিবেদিতা, তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে স্বামী সদানন্দ এবং স্বামী শিবানন্দ, নিত্যানন্দ এবং আত্মানন্দ সদস্য হিসাবে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। প্লেগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রদত্ত পরিষেবাগুলি কলকাতার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে উঠেছিল। 




মানুষের ইচ্ছেশক্তি ও নিরলস সেবা দানের মাধ্যমে যদি স্বামীজী মহামারীর মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়ে থাকেন তাহলে আজকের সময় দাঁড়িয়ে একে ওপরের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা কেন মহামারীকে মোকাবিলা করতে পারব না ? আমরা আনলক হয়েছি ঠিকই। তাই বলি মাক্স না পরে বাড়ি থেকে বেরোবো না।ভারত সরকার ও রাজ্য সরকার কর্তৃক বিধিনিষেধ মেনে চলুন ও করোনা আক্রান্ত কাউকে দূরে না ঠেলে দিয়ে তার পাশে দাঁড়ান।সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনে ও স্বামীজীর আদর্শে ভ্রাতৃত্ববোধের পরিচয় দিন।