দেবরাজ ইন্দ্রের বিপক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বিজয়ের স্মরণে গোবর্ধন পূজা
দেবরাজ ইন্দ্রের বিপক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বিজয়ের স্মরণে গোবর্ধন পূজা উদযাপিত হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মাত্র সাত বছর বয়সে ব্রজবাসীদের ইন্দ্রের ক্রোধ থেকে রক্ষা করার জন্য গোবর্ধন পর্বতকে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে ধারন করেছিলেন।
জানাযায়, পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজবাসীদের ইন্দ্রযজ্ঞের জন্য প্রস্তুতি নিতে দেখে তাদের ইন্দ্রের পূজার পরিবর্তে গোবর্ধন পর্বতের পূজা করতে অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ইন্দ্র ক্রুদ্ধ হয়ে সমগ্র বৃন্দাবনে প্রলয়কালীন বৃষ্টিপাত শুরু করেন। কৃষ্ণ তাঁর কনিষ্ঠ আঙুল দিয়ে ছাতার মতো গোবর্ধন পর্বত ধারন করে বৃন্দাবনের সমস্ত বাসিন্দাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পরে ইন্দ্র ভুল বুঝতে পেরে, শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এভাবে পরমেশ্বর ভগবান প্রমাণ করেছিলেন যে ভক্তিপূর্ণ সেবায় নিযুক্ত আত্মসমর্পণকারী ভক্ত, সমস্ত বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত এবং বস্তুগত অনুগ্রহের জন্য কোনও দেবদেবীর উপাসনা করার প্রয়োজন নেই। এই লীলা গোবর্ধন লীলা হিসাবে পরিচিত এবং শ্রীমদ্ভাগবতমের দশম স্কন্ধে বর্ণিত আছে।
গোবর্ধন পূজাটিকে ‘অন্নকূট’ বলেও উল্লেখ করা হয়। “অন্ন” শব্দের অর্থ ভাত এবং “কূট” অর্থ পর্বত। সুতরাং “অন্নকূট” উৎসবে অন্নের ও নানাবিধ ব্যঞ্জনের পর্বত তৈরি করা হয়।
শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশ অনুসারে, ব্রজবাসীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, প্রতি বছর কার্তিক মাসে এই উৎসব পালিত হয়। ভক্তরা একটি অন্নকূট (“অন্নের একটি ছোট পাহাড়”) প্রস্তুত করেন এবং মিষ্টি, কেক, সবজি এবং বিভিন্ন রঙিন অন্ন দিয়ে সজ্জিত করেন। গোবর্ধন এবং আশেপাশের হ্রদগুলির একটি ক্ষুদ্র রূপ ভক্ত মাতাজী এবং শিশুরা তৈরি করেন।
ভক্তরা গোবর্ধন পুজার দিন গোমাতার পূজাও করেন। কৃষ্ণ গোপাল নামে পরিচিত – গোমাতার রক্ষক। বিষ্ণু পুরাণে একটি প্রার্থনা রয়েছে যা উল্লেখ করেছে: নমো ব্রহ্মণ্য-দেবায় গো-ব্রাহ্মণ-হিতায় চ। এখানে কৃষ্ণকে গো ও ব্রাহ্মণদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই উৎসব চলাকালীন গোমাতাকে সজ্জিত করা হয় এবং খাওয়ানো হয়। এদিন গোমাতাকে সামনে রেখে ভক্তগণ গোবর্ধন পর্বত পরিক্রমা করেন।
সৌজন্যে ইস্কন বাংলাদেশ
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊