শব্দদূষণ থেকে বাঁচাতে সচেতনমূলক পথসভা ও লিফলেট বিলি যুক্তিবাদী সমিতির



করোনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু। এই সময় দরকার মানুষের প্রতি মানুষের সহানুভূতি ও সচেতন থাকা। কিন্তু তা না করে মানুষ আনন্দ উৎসবে মেতে উঠছে এবং উল্লাসে ব্যস্ত থাকছে। এসবের মধ্যে মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব নিয়ে নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন জায়গায় পথসভা, পোস্টারিং ও লিফলেট বিলি করে বেড়াচ্ছে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি। নবদ্বীপের প্রচীন মায়াপুর, দন্ডপানি তলা, ফঁসিতলা ও রাধাবাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় শব্দবাজির বিরুদ্ধে সচেতনমূলক পথসভা ও লিফলেট বিলি করা হয়।

একদিকে যেমন করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতনতার বার্তা পাশাপাশি আসন্ন  লক্ষ্মী পুজো এবং লক্ষ্মী পুজোয় রাসের কাঠামো পুজো উৎসব উপলক্ষে সমগ্র নবদ্বীপ শহর জুড়ে উৎসবের নামে প্রচন্ড শব্দবাজির যে উল্লাস সৃষ্টি হবে তার বিরুদ্ধে আগাম সচেতনতার বার্তা দিতেই পথে নেমেছে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখা।

বেশ কিছুদিন আগে সপ্তাহব্যাপী যুক্তিবাদী সমিতি শব্দবাজির বিরুদ্ধে নবদ্বীপ শহর জুড়ে পোস্টারিং কর্মসূচি চালায়। গত ১৯ অক্টোবর এই সমিতির পক্ষ থেকে নবদ্বীপ বিডিও অফিস, নবদ্বীপ পৌরসভায় ই-মেলে এবং নবদ্বীপ থানায় সরাসরি ডেপুটেশন দেওয়া হয়। 


যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার সম্পাদক প্রতাপ চন্দ্র দাস জানান- " সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রে শব্দবাজির প্রভাব মারাত্মক। বাইরের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য যে পরিমাণ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রয়োজন, তা গড়ে ওঠার আগেই শিশুদের কানের পাশে বাজে ওই বাজি নামক শব্দ দানব। বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য বাতাসে মিশে যাওয়া, শব্দদৈত্যের হুঙ্কার, তার পাশাপাশি দিবারাত্র উচ্চস্বরে চলে মাইকে গান। সরকারের উচিৎ এর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। সেই সঙ্গে বাজি কারখানাগুলো সব বন্ধ করার ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া জরুরী। "

যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষে সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, "এই শব্দবাজির কারণে বয়স্ক মানুষ যেমন একদিকে অসুস্থ হয়ে পরেন, পাশাপাশি যারা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি সহ নতুন করে মানসিক উদ্বেগ তৈরি হয় এই শব্দবাজির ফলে। হার্টের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের কাছে এ যন্ত্রণা তো বাৎসরিক পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে। আনন্দ করুন আপত্তি নেই কিন্তু আপনার আনন্দ যেনো অন্যের কাছে দূঃসংবাদ বহন করে না আনে।"  

ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার এই কর্মকাণ্ডে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কাছেও আবেদন রাখা হয় শব্দবাজির বিরুদ্ধে বৃহত্তর জনমত গড়ে তোলার। 

যুক্তিবাদী সমিতির আরেক সদস্য সোমনাথ রায় বলেন, " শব্দদূষণের বিরুদ্ধে শুধু যুক্তিবাদী সমিতিকেই নয়, সর্বস্তরের মানুষকে এর বিরুদ্ধে পথে নামতে হবে। তবেই আমরা শব্দবাজির তান্ডব থেকে রেহাই পেতে পারি।"