সাধারণ মেয়ে থেকে জলকন্যা হয়ে ওঠার আর এক নাম আরতি সাহা 





মাত্র ৪ বছর বয়স থেকেই সাঁতার শেখা শুরু-তারপর একে একে ইতিহাস সৃষ্টি করেন জলকন্যা আরতি সাহা। কলকাতায় ১৯৪০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। হুগলী নদীতে তাঁর সাঁতার শেখা। ভারতের অন্যতম সাঁতারু শচিন নাগের কাছেই সাঁতারের প্রশিক্ষণ। আর অনুপ্রেরণা মিহির সেন। 

আরতি সাহা যে সময়ে জন্মেছেন, সে সময়ে ভারত তো বটেই, সারা পৃথিবীতেই খেলাধুলায় মেয়েদের যোগদানকে খুব ভাল চোখে দেখা হত না। ভারতে রক্ষণশীলতার বেড়া ডিঙিয়ে খুব অল্প মেয়েই ঐ সময়ে খেলাধুলায় যোগ দিতেন। কিন্তু আরতি সে বড় সমুদ্রই হোক কিংবা সামাজিক বাঁধা সব কিছু অতিক্রম করে গেছেন। 


পিতা পাঁচুগোপাল সাহার তিন সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় ও দুই মেয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠা ছিলেন। পাঁচুগোপাল সাহা ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর এক সাধারণ চাকুরীজীবী ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত মাত্র আড়াই বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। যারফলে তার বড় ভাই ও ছোটো বোন ভারতী মামার বাড়িতে এবং তিনি নিজে উত্তর কলকাতায় ঠাকুমার কাছে মানুষ হতে থাকেন। চার বছর বয়সে তার কাকার সাথে চাঁপাতলা ঘাটে স্নান করতে যেয়ে সাঁতার শেখা শুরু করেন। সাঁতারের প্রতি তার আগ্রহ দেখে পাঁচুগোপাল সাহা তার কন্যাকে শোভাবাজারের হাটখোলা সুইমিং ক্লাবে ভর্তি করে দেন। ১৯৪৬ সালে পাঁচ বছর বয়সে শৈলেন্দ্র স্মৃতি সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১১০গজ দূরত্বের ফ্রি স্টাইলে সোনা জেতেন।

একনজরে-
    • ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে আরতি দেবী বহু সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
    • ১৯৪৫ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ২২টি রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিলেন তিনি। 
    • ১৯৪৮ সালে তিনি মুম্বইতে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় রূপো ও ব্রোঞ্জ যেতেন। 
    • ১৯৫১ সালে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় ১ মিনিট ৩৭.৬ সেকেন্ডে ১০০মিটার অতিক্রম করে ডলি নাজিরের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। 
    • ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে তিনি সাঁতারু ডলি নাজিরের সঙ্গে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
    • ১৯৫৯ সালে প্রথম এশীয় মহিলা সাঁতারু হিসাবে তিনি ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন। 
    • ১৯৬০ সালে প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসাবে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।

আজ গুগুল ডুডুলে আরতি সাহার জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছে। কম্পাস হাতে সমুদ্রে সাঁতরে চলছেন আরতি সাহা এমনি ছবি এঁকেছেন কলকাতার শিল্পী লাবণ্য নায়ডু।