সোমনাথ পাল , পেট্রাপোলঃ  কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালী। তাও যদি হয় ইলিশ ,তাহলে তো আর কথায় নেই | সরকারি নিয়মের ঘেরা টোপ। তাই পদ্মার ইলিশের ভাঁড়ারে টান। বেশ কয়েক বছর বাঙালির খাওয়ার পাতে দেখা মিলছে না জলের রুপালি শস্য ইলিশের। কারণ চাহিদা মতো আমদানি নেই। স্বাদ আছে কিন্তু সাধ্য নেই । 

তারপর গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। অগত্যা বাজারে গিয়ে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। 
দিন কয়েক পরেই বিদায় নেবে বর্ষা। এপার বাংলায় যতই থাকুক ইলিশ তবুও ওপার বাংলার পদ্মার ইলিশের স্বাদই অন্যরকম। পদ্মার ইলিশ এপার বাংলায় মেলেনি বিগত বেশ কয়েক বছর। কারণ বিগত কয়েক বছর ধরে ওপার বাংলার মৎস জীবীদের ছোট ইলিশ ধরাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাসিনা সরকার। পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশের পেট্রাপোল ও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ইলিশ আমদানি ২০১২ সালের পর থেকে বন্ধ করে ও দেশের সরকার। তার জেরেই বেশ কয়েক বছর পদ্মার ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত এপার বাংলার মানুষ। 
এরই মধ্যে বাংলার মানুষের স্বাদ মেটাতে হাসিনা সরকারকে গত বছরই ইলিশ মাছ আমদানির আবেদন জানিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাছ আমদানির অঙ্গিকার শেষ পর্যন্ত আটকে যায় তিস্তা জল বণ্টনের চুক্তির ফাঁসে। 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইলিশ মাছের পরিবর্তে তিস্তা জলবণ্টন সমস্যা মেটানোর প্রস্তাব দেন। তাতেই তৈরি হয় আইনি জটিলতা। কিন্তু স্বাদের জিভ মানে না সরকারি জটিলতা। 


বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর বাকি আর মাত্র এক মাস । এরই মাঝে তিস্তা ইস্যুকে কিছুটা দূরে সরিয়ে গত বছর অক্টোবর মাস পর্যন্ত এপার বাংলায় পাঁচশো টন ইলিশ মাছ রফতানি করে বাংলাদেশ সরকার। ভোজন রসিক বাঙালীর ইলিশ বলে কথা- এবারও আমদানী হবে ১৫০০ টন পদ্মার ইলিশ । সেই মতো দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এবারও সোমবার রাতে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকল একটি - দুটি নয় প্রায় ১২ টন ইলিশ ৷ 

মুহূর্তের মধ্যে ইলিশ আমদানির খবর পৌঁছে যায় স্থানীয় বাজারগুলিতে। এক বছর পর এপার বাংলায় মিলবে পদ্মার ইলিশ। অবশেষে স্বাদ পূরণ হবে। আশায় বুক বাঁধছে ভোজন রসিক বাঙালি।