উত্তর দিনাজপুর জেলা শাসককে স্বরাজ ইন্ডিয়ার ভুট্টা চাষিদের স্মারকলিপি - অবিলম্বে সমর্থন মূল্যে সরকারী ক্রয়ের দাবী 




কর্ণজোড়া, রায়গঞ্জ, ১৮ আগস্ট, ২০২০: স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ আন্দোলনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসক কার্যালয়ের আধিকারিকদের সাথে সাক্ষাৎ করে জেলার ভুট্টা চাষীদের বিস্তারিত দাবির স্মারকলিপি জমা করেছে। কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে ভুট্টার বাজার দর অর্ধেক হয়ে যাওয়ার কারণে চাষীরা অভূতপূর্ব আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে এবং তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং প্রয়োজনীয় সমাধানের ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে যদি অবিলম্বে ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, চাষীরা তাদের সংগ্রামকে আরও তীব্র করবে এবং জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ হবে।


এটি উল্লেখ্য যে এক ডজনেরও বেশি চিঠি ইমেলের মাধ্যমে পাঠানোর পর শেষ পর্যন্ত জেলা শাসক বৈঠকটির আহ্বান জানান। এটাও উল্লেখযোগ্য যে আজ অবধি স্বরাজ ইন্ডিয়া প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষি সচিব, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য কৃষি মন্ত্রী, রাজ্য কৃষি সচিব, উত্তর দিনাজপুরের তিন সংসদ সদস্য ও আট বিধায়ককে প্রায় ৪০০ চিঠি লিখেছে। এছাড়াও, করনদিঘি এবং গোয়ালপোখোর-১ ব্লকের বিডিওদের স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০০ টিরও বেশি গ্রাম পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পেতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় প্রতিবাদে যোগ দিয়েছে।


স্বরাজ ইন্ডিয়ার জেলা সহ-সভাপতি শম্ভুলাল রায় বলেন: "আজকের বৈঠকের পর কিছু ফল হবে বলে আশা করছি। কিন্তু প্রশাসন যদি অবহেলা বজায় রাখে তবে জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ হবে, যা এই কোভিডকালে জন্য দুর্ভাগ্যজনভাবে জেলায় স্বাস্থ্য সঙ্কটের বাড়াবে। কিন্তু কৃষকরা তাদের ধৈর্যের শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছে কারণ প্রধানমন্ত্রী থেকে জেলা শাসক পর্যন্ত কেউ তাদের কথা শুনছেন না।"
এটি মনে রাখা যেতে পারে যে উত্তর দিনাজপুের চাষীরা তাদের ভুট্টা ফসল ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (এমএসপি) অনেক নিচে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। 


উত্তর দিনাজপুরের ভুট্টা চাষীদের পক্ষে স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ আন্দোলন তাদের স্মারকলিপি মাধ্যমে জেলা শাসকের কাছে দাবি জানিয়েছে:



অবিলম্বে:


(১) উত্তর দিনাজপুরের ভুট্টা চাষের অঞ্চলগুলিতে সহজেই নাগালযোগ্য জায়গায় কৃষকদের থেকে সরাসরি ক্রয় করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র খোলার ব্যবস্থা করতে হবে;
(২) ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত কর্মচারী এবং অর্থ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে যাতে সব চাষীদের পুরো ভুট্টা ফসল কোনরকম বাধা বা অসুবিধা ছাড়াই নির্বিঘ্নে এম.এস.পি দরে ক্রয় করা যায়;
(৩) পঞ্চায়েত স্তরে এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে যে চাষীরা তাদের ভুট্টার ফসল এম.এস.পি–র চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে, তারা এই ক্ষতির জন্য দাবী দাখিল করতে পারে এবং তাৎক্ষনিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরে কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেতে পারে;


দ্রুততার সাথে:


(১) উত্তর দিনাজপুর জেলার সমস্ত ভুট্টা চাষের অঞ্চলগুলিতে ভুট্টা বিক্রির জন্য নিয়ন্ত্রিত কৃষি বাজারের ব্যবস্থা করতে হবে;
(২) নিয়মিত নিরীক্ষণ মাধ্যমে এই সব নিয়ন্ত্রিত কৃষি বাজারগুলিতে এম.এস.পি বা তার থেকে বেশি দরে সমস্ত লেনদেনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে;
(৩) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে ভুট্টার জন্য একটি কার্যকরী মূল্য সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা ও রুপায়ন করতে হবে; 
(৪) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে ভুট্টার জন্য একটি কার্যকরী মূল্য ঘাটতি প্রকল্প ঘোষণা ও রুপায়ন করতে হবে।