ভুট্টা চাষির সংকটে খাদ্যদপ্তরের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে রাজ্য কৃষিদপ্তর ঝাড়া হাত-পা! 




কোলকাতা, ২৯ আগস্ট ২০২০: রাজ্যের ভুট্টা চাষীদের ভীষণ সংকট - তারা সরকারি ভাবে নির্ধারিত কুইন্টল প্রতি ১৭৬০/- টাকা এম.এস.পি (নূন্যতম সহায়ক মূল্যের) অর্ধেকেরও কম দামে তাঁদের ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কারণ বেচার জন্য কোথাও কোন নিয়ন্ত্রিত বাজার ও সরকারী ক্রয় কেন্দ্র নেই- এমনই অভিযোগ স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষান সংগঠনের । সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- "এই বিষয়ে বহু চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যপাল বৈঠক করতে নারাজ; মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রী মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। এবারে রাজ্যে কৃষিদপ্তর হাত ধুয়ে ফেলে দুর্দশাগ্রস্ত ভুট্টা চাষীদের সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব এড়িয়ে গেল - সোজাসুজি জানিয়ে দিল এটা খাদ্যদপ্তরের দায়িত্ব অতএব তারা যথাযত ব্যবস্থা করুক।"


স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষান আন্দোলন গত ২২শে জুন থেকে ২৫শে আগস্ট রাজ্যের ভুট্টা চাষীদের এই সংকট নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী এবং কৃষিসচিব, প্রত্যেককে লাগাতার তিরিশটিরও বেশি চিঠি লিখেছে। শেষপর্যন্ত উত্তর হিসেবে গত ২৫শে আগস্ট কৃষিদপ্তরের যুগ্নসচিব খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের কমিশনারকে একটি মেমো পাঠান, যার সারমর্ম হচ্ছে "যেহেতু খাদ্যশস্য ইত্যাদি ক্রয়ের দায়িত্ব রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের, আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আপনাকে বিষয়টি দেখার এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য অনুরোধ করতে”। 

স্বভাবতই সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে-

১. যখন সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালের রাজ্য সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তেই চাষীদের ভুট্টা চাষের করতে উৎসাহিত করেছে, তখন সরকারের ওপর কি এইটুকু দায়িত্ব বর্তায় না যে ভুট্টা চাষীরা যেন সরকার নির্ধারিত এম.এস.পি-তে তাদের ফসল বিক্রি করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা?

২. কৃষিদপ্তরের কি খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে এটা সুনিশ্চিত করা উচিত ছিল না যাতে ভুট্টা চাষীরা তাঁদের ফসল এম.এস.পি-তে বিক্রি করতে পারে? এই প্রসঙ্গে মনে রাখার দরকার যে এখন অবধি রাজ্যে একটিও সরকারী ভুট্টা কেন্দ্র নেই।

৩. যখন ভুট্টা চাষীদের সমস্যার কথা রাজ্যের কৃষিদপ্তরের গোচরে ২২শে জুন আনা হয়েছিল, তখন তাদের উত্তর দিতে ৬০ দিন অর্থাৎ দুমাসেরও বেশি সময় লাগলো কেন?

৪. রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী, দুজনকেই তিরিশটির ও বেশী চিঠি দিয়ে আর্জি জানানো হয়েছিল এই সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে বৈঠকের এবং স্বারকলিপি গ্রহণ করতে, কিন্তু এখন অবধি তারা উত্তর দিতে বা বৈঠক করতে নারাজ কেন?

৫. রাজ্যের চাষীরা, যারা মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার জন্য নিরলস প্রাণপাত করছে, এমনকি এই কোরোনা পরিস্থিতিকেও উপেক্ষা করে পরিশ্রম করে যাচ্ছে যাতে রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে না পড়ে, তাঁদের প্রতি কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর কোন নৈতিক ও আইনি কর্তব্য নেই?

আজ স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষান আন্দোলন রাজ্যের ভুট্টা চাষীদের যাবতীয় সমস্যার কথা বিশদে উল্লেখ করে এবং সমস্যার সমাধান করে যাতে ভুট্টা চাষীরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে তাঁদের ফসল বেচতে পারে, সেই আর্জি জানিয়ে, একটি স্বারকলিপি জমা দেওয়া ও অবিলম্বে একটি বৈঠকের দাবি জানিয়ে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের কমিশনার কে চিঠি দিয়েছে ।