করোনার অজুহাতে দুর্দশাগ্রস্থ চাষীদের সঙ্গে দেখা করতে নারাজ রাজ্যপাল! 




কোলকাতা, ২৭ আগস্ট ২০২০: ভুট্টা চাষীদের ৩ সদস্যের ছোট প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্র সরকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ফসলের দাম না পাওয়ার অভিযোগ ও অসুবিধা সম্বন্ধিত বৈঠকের প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল শ্রী জগদীপ ধনকর। 

২৫ জুন থেকে ১১ আগস্ট, মোট ১৭টি চিঠি দেবার পর রাজভবনের ডেপুটি সচিব স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ আন্দোলনকে জানান যে করোনা অতিমারীর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চাষীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপালের সাক্ষাৎ সম্ভব নয় । অথচ রাজ্যপাল দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর ও লকডাউন চলাকালীন বহু বৈঠক ও জনকর্মসূচীতে যোগদান করেছেন, যেমন: 


১। এপ্রিল ১১ - দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধি দলের সাথে দেখা করে রাজ্যপালের বৈঠক ও স্মারকলিপি গ্রহণ

২। মে ১২ - বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক

৩। জুন ৫ - রাজভবনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন

৪। জুলাই ১৩ - দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক

৫। ১৫ আগস্ট - রাজভবনে চা-চক্র 

এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন  স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ সংগঠন।  স্বরাজ ইন্ডিয়ার সর্বভারতীয় সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব বলেন: "লকডাউন পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল ধনকর একাধিকবার রাজনৈতিক বক্তব্য ব্যক্ত করার জন্য সাংবাদিকদের রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন। অন্তত তিন-চার বার তিনি যথেষ্ট সময় দিয়ে বিজেপি দলের প্রতিনিধিদের সাথে রাজভবনে দেখা করে তাদের কথা শুনেছেন এবং আলোচনা করেছেন। অতিমারীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি থাকা সত্ত্বেও তিনি দিল্লী গিয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নালিশ করে এসেছেন। গত স্বাধীনতা দিবসে রাজভবনে তার আয়োজিত সান্ধ্য চা-চক্রে একশোর বেশী অতিথি আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করেছেন। তাহলে গরীব চাষীদের সমস্যার কথা শুনতে ওনার কিসের এতো অনীহা? কেন তাঁদের সমস্যা ও দুর্দশার কথা না শোনার জন্য তিনি অতিমারীর দোহাই দেন? ওনার অগ্রাধিকারের তালিকায় কি পড়ে - কোন এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের অপ্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা, কিছু ঠুনকো কর্মসূচী নাকি রাজ্যের দুর্দশাগ্রস্থ গরীব চাষী? পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে দরিদ্র চাষীদের সমস্যা নিয়ে রাজ্যপালের কোনও চিন্তা বা মাথাব্যথা নেই। "

প্রতি মরশুমের মত এবারও রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ভুট্টা চাষীদের জীবন এক নিদারুন সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কারণ তারা উৎপন্ন ফসলের কেন্দ্র সরকার ঘোষিত সমর্থন মূল্য (এম.এস.পি) দর পাচ্ছেনা। এম.এস.পি প্রতি কুইন্টাল ১৭৬০ টাকা কিন্তু কোন সরকারী ক্রয় ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রিত বাজার না থাকার জন্য অর্ধেক বা তার থেকেও কম দামে চাষীরা ফসল বেচতে বাধ্য হচ্ছে। সমর্থন মূল্যে ধান কেনার ব্যবস্থার মত ভুট্টা কেনার কোন সরকারী ব্যবস্থা নেই। স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরেই সারাদেশে চাষীদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং রাজ্যের ভুট্টা চাষীদের সমস্যা নিয়েও তারা সরব। 

ইতিমধ্যেই তাঁদের পক্ষ থেকে ভুট্টা চাষীদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের জন্য এবং প্রতিনিধিদের দ্বারা একটি স্মারকলিপি পেশ করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উচ্চতম মহল থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি ও জেলা প্রশাসন কে চারশোরও বেশি চিঠি দেওয়া হয়েছে।