৫২৫ গ্রাম হেরোইন সহ গ্রেপ্তার হল দুই ব্যাক্তি
রাজেন্দ্র নাথ দত্ত, মুর্শিদাবাদ, ৫ই জুলাই ২০২০ঃ মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানা এলাকা থেকে আবারো উদ্ধার হেরোইন। মণিপুর গ্যাংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুর্শিদাবাদে মাদক পাচারকারীরা সক্রিয় হচ্ছে বলে সংবাদ সূত্রে জানা যায়। গত কাল সন্ধে বেলায় লালগোলা থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কালমেঘা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫২৫ গ্রাম হেরোইনসহ ২পাচারকারীকে গ্রেফতার করে। ধৃত দুই পাচারকারীর নাম রহিদুল ইসলাম ও জেসিম হক।
ধৃত পাচারকারী দের বাড়ি লালগোলা থানার নতুন গ্রাম এলাকায়। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান তারা হেরোইন পাচার করার উদ্দেশ্যে সাইকেল করে এসেছিল। পুলিশ সূত্রে খবর এই পাচার চক্রের পিছনে কারা কারা আছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ধৃত ২ অভিযুক্তকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন রেখে আদালতে তোলা হয় জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে।
বর্ডারে এখন কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য সীমান্তবর্তী এলাকা গুলিতে অনেক বেশি বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। তারপরেও তারা কারবার চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে ত্রিপুরা বর্ডার দিয়ে নেশার সামগ্রী ঢুকত। কিন্তু সেখানে নিরপত্তারক্ষী বাহিনী সচেতন হয়ে যাওয়ায় কারবারিরা মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি ব্যবহার করছে।
পুলিস জানিয়েছে, 'মাদক কারবারের নেটওয়ার্ক অনেক বড়। পাচার চক্রে তদন্তকারীরা অনেকের নাম পেয়েছে। তাদের খোঁজেও পুলিস তল্লাশি শুরু করেছে।' পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, 'মণিপুরের সেখানকার কারবারিদের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের পাচারকারীরা হাত মিলিয়েছে। বাংলাদেশে নেশার এই সামগ্রী পাচার করে তারা কয়েক গুণ লাভ করে। মণিপুর থেকে গাড়িতে লুকিয়ে নেশার সামগ্রী নিয়ে আসে এখানকার কারবারিরা। পুলিস সোর্সের মাধ্যমে আগাম খবর না পেলে কারবারিদের ধরতেও পারে না।'
লকডাউনে দাম কিছুটা বাড়লেও, টাকা দিলেই মিলছে গাঁজা, হেরোইনের মতো মাদক। এখানে গাঁজাকে সকলে ‘তামাক’ নামেই চেনে। করোনা পরিস্থিতিতে শহরে বেড়েছে ‘ফ্লাইং সেল’। অর্থাৎ ফোনে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে তা সংগ্রহ করছে নেশাড়ুরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, 'পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই মাদক কারবারের রমরমা।'
যদিও পুলিশের দাবি, সারা বছর অভিযান চালানো হয়। মুর্শিদাবাদের মতো সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে কখনও বিএসএফ, কখনও পুলিস মাদক দ্রব্য উদ্ধার করে। বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে মাদকাসক্ত বহু বালক ও কিশোরের দেখা পাওয়া যায়। শহরবাসীর দাবি, মাদকের কারবার বাড়ায় বিভিন্ন জায়গায় আসামাজিক কাজ বাড়ছে। অভিযোগ, দিনেরবেলাতেও বিভিন্ন এলাকায় হাতবদল হয় মাদকের পুরিয়া।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাংলাদেশ থেকে বঁনগা সীমান্ত হয়ে এ রাজ্যে হেরোইন ঢোকে। অসম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড থেকে মূলত আসে গাঁজা। পরে তা হাত ঘুরে জেলায় জেলায় পৌঁছয়। এখন জোগানে টান পড়ায় দাম বেড়েছে। এখন শহরে কাশির সিরাপ, ব্যথার ওষুধ, ডেনড্রাইটের নেশা বাড়ছে। শহরবাসীর অভিযোগ, 'পুলিস অভিযান চালায় ঠিকই। তবে, মাদক পাচারের মূল পাণ্ডাদের কেউ ধরা পড়ে না। তাই শুধু সচেতনতার প্রচার করলেই হবে না, পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে বলে শহরের বাসিন্দারা মনে করেন।'
0 মন্তব্যসমূহ
thanks