নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো অতীত, সালুগ্রাম অঞ্চল পেল পাকা সেতু 


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত, মুর্শিদাবাদ, ৯ই জুলাই ২০২০ঃ মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দী মহকুমার ভরতপুর -২ ব্লকের সালুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে বসন্ত নালার উপর পাকা সেতুর দাবি করে আসছিলেন। সালু অঞ্চলের মসড্ডা গ্ৰাম পেরিয়ে যে বসন্ত নালা ব্রিজ, যেটি মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান এই তিনটি জেলা সংযোগকারী সেতু। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ভাবে পড়ে ছিল। এতদিন তাঁরা অভিযোগ করতেন, প্রতিবার ভোট এলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতা, মন্ত্রীরা সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়ে যেতেন  এলাকাবাসীদের এই সেতুটি পাকা করার বিষয়ে। কিন্তু কেউ কোন কথা রাখেননি। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বামফ্রন্টের নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কাজ হয়নি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী ও ২৫ বছর ধরে কংগ্রেসের সাংসদ আছেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কাজ করেননি আক্ষেপের সুরে বলছেন এলাকাবাসি। 

এলাকাবাসীরা কোনরকমে একটা বাঁশের সেতু তৈরি করে দু চাকা যান পারাপার করতেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।এলাকাবাসির দীর্ঘ দিনের দাবি ও তাদের কষ্ট দেখে ভরতপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ মহঃ আজাহার উদ্দিন সিজার  গত বছর এলাকাবাসীদের কথা দিয়েছিলেন সেতুটি করার ব্যাপারে। পঞ্চায়েত সমিতির এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে টাকা বরাদ্দ করে সেতুটি নির্মাণ করলেন। 

মহম্মদ আজাহার উদ্দিন সিজার ও কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান) বিধানসভার বিধায়ক সেখ শাহনাওয়াজ ফিতে কেটে পাকা সেতুটির শুভ উদ্বোধন করলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কান্দী মহকুমা ছাত্র যুব নেতা শাশ্বত মুখার্জী, সালু গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান  মুস্তাক আলী। 

এলাকাবাসীদের দীর্ঘদিনের কষ্টের অবসান ঘটলো। মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানের ও বীরভূম জেলার সাথে যোগাযোগ এর জন্য এলাকার দীর্ঘ দিনের দাবী বসন্ত নালার উপর সেতু নির্মাণের মাধ্যমে তিন জেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল  পরিবর্তন হল। তবে একাধিক বার অর্থ অনুমোদন হওয়ার পরেও কাজ হয়নি। সালু গ্রাম পঞ্চায়েতের মসড্ডা, সালু, রায় গ্রাম, প্রসাদপুর - সহ বারোটি গ্রামের বাসিন্দারা ওই বসন্ত নালা টি নিয়মিত পারা পার করে পড়শি জেলায় যাতায়াত করেন। আবার বীরভূম জেলার ও পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার চাকটা, হলদি, মুরুট, আনখোনা- স হ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারাও সালারে আসতেন বিভিন্ন কাজে। 

প্রতিবছর বর্ষাকালে বসন্ত নালার জায়গা টি হাঁটু সমান কাদায় ডুবে যেত। পাকা সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের, কিন্তু সেতুটি নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা দিয়ে এবং তাদের স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে বসন্ত নালার উপর বাঁশের সেতু বানিয়ে যাতায়াত করেতেন। এলাকার কৃষকেরা সালার ও শাক গ্রামের বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।  সালারের ব্যবসায়িকরা বলেন, "এই সেতুটি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আশেপাশের লোকেদের কাছে সালারটি অনেক কাছে হয়ে গেল । বাজার হাট  থেকে শুরু করে চিকিৎসাব্যবস্থা, ট্রেন, বাস স্কুল কলেজ পরিষেবা সমস্ত কিছুই হাতের নাগালে পেয়ে যাবে।" এখন থেকে এই সেতুটির উপর দিয়ে দুই চাকা, চারচাকা এবং ভারী যানবাহন সবকিছুই পারাপার করা সম্ভব হবে।