শুভাশিস দাশঃ 

রথের সাথে আমাদের শৈশবের একটা স্মৃতি জড়িয়ে প্রায় প্রত্যেকেরই । বারো মাসে তেরো পার্বণের একটি রথ যাত্রা । ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় রথ উত্সব পালিত হলেও উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে এই উত্সব অন্যমাত্রা পায় । পার্শবর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশেও এই উত্সবের প্রচলন দেখা যায় । 

আষাঢ়ের শুক্লা দ্বিতীয়ায় এই রথ উত্সবের সূচনা । 

কথিত আছে এদিন জগন্নাথ তাঁর বলরাম এবং বোন সুভ্দ্রা কে নিয়ে মাসির বাড়ি যান । এই যাত্রাই মুলত রথযাত্রা । ধর্মীয় রীতি অনেক আছে এই রথ যাত্রা কে ঘিরে । মাসির বাড়ি থেকে আবার উল্টো রথের দিন তাঁরা ফিরে আসেন । 

বিখ্যাত রথ উত্সব উড়িষ্যার পুরি ধামে । এই খানে জগন্নাথ দেবের রথের উচ্চতা পঁয়তাল্লিশ ফুট । 
পশ্চিমবঙ্গের মাহেষের রথও বিখ্যাত । 

এদিকে কোচবিহারের রথ কিন্তু একটু আলাদা মাত্রা বহন করে । এখানে জগন্নাথ দেবের পরিবর্তে কোচবিহারের মহারাজা দের কুল দেবতা মদনমোহন জিউর রথ যাত্রার প্রচলন আছে । 
আচার অনুষ্ঠানের মধ্যেও মিল পাওয়া যায় জগন্নাথ দেবের রথের সাথে । 

এখন এক অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে আমরা চলছি । সামাজিক অনেক কিছু আমাদের বাদ দিতে হচ্ছে এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে । বিশ্ব জুড়ে করোনা র যে থাবা সে থেকে আমরাও নিস্তার পাই নি । 

এই পরিস্থিতির মধ্যে চলে এসেছে রথ যাত্রা । ভিড় এড়ানোর জন্য এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবার রথ পথে নামছে না । শেষ মেশ যদিও উচ্চ আদালত পুরীর জগন্নাথ দেবের রথের অনুমতি দিয়েছেন কার্ফু জারি রেখে । 

রথের সাথে কলা এবং লটকন এর একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে । কিন্তু এবার আর সেই উদ্দীপনা নেই । রথ চলবে না । পথের উপর পাওয়া যাবে না লটকন বাতাসা আর কলা । 
আবার হয়তো পুরনো দিন ফিরে আসবে । হে প্রভু জগন্নাথ , ফিরিয়ে দিন আমাদের সেই আনন্দের রথ উত্সব । 





Attachments area