১৫ই জুন গভীর রাতে ভারত-চীন সীমান্তের পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চীনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২০জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হন। অন্তত ৭৬ জন সেনা আহত অবস্থঅয় হাসপাতালে ভর্তি বলেও জানা গিয়েছে। এরপরেই শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সর্বদল বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বিদেশমন্ত্রী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ গালওয়ান সংঘর্ষে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

এদিন কয়েকটি দল বাদে স্ব রাজনৈতিক দলের উচ্চ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই সর্বদল বৈঠকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। লাদাখে ২০ সেনার মৃত্যুর জন্যে কী গোয়েন্দা ব্যর্থতা দায়ী নয়? এইভাবেই আক্রমণ করেন তিনি। 

বৈঠকে কার্যত মোদী সরকারকে তুলোধনা করেন সোনিয়া। তাঁর মতে, এই বৈঠকটি আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, গত মে মাসের পাঁচ তারিখ চিনের লাদাখে অনুপ্রবেশের খবর এসেছিল। কিন্তু সত্যিটা কি? তাঁর প্রশ্ন, ঠিক কবে ভারতে ঢোকে চিনের সেনাবাহিনী। এখনও আমরা অনেক কিছু অন্ধকারে বলেও তোপ দাগেন সোনিয়া গান্ধী।

তাঁর দাবি, অনেক কিছুই স্পষ্ট করে জানা নেই। একই সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী প্রশ্ন তোলেন যে, সীমান্তে চিনের গতিবিধি নিয়ে কী কিছু জানতে পারেনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। বা জানলেও সরকারকে কি কিছুই জানানো হয়নি? এটা কী গোয়েন্দা ব্যর্থতা নয়, মোদীকে প্রশ্ন সোনিয়া গান্ধীর।

পরিস্থিতি এখন আর গোপন করা না করে দেশের স্বার্থে সমস্ত কিছু জানানোর কথা বলেন সোনিয়া। এছাড়াও, ভবিষ্যতের কী পরিকল্পনা, সেটাও জিজ্ঞেস করেন তিনি। কতটা তৈরী বাহিনী, সেই সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন তিনি। ২০১৩ সালে মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর তৈরীর কাজ শুরু হলেও কতটা কাজ এগিয়েছে, সেই প্রশ্ন করেন তিনি।

কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেশের সঙ্গে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে। একজোট হয়ে সবাই লড়াই করব। কিন্তু কোনও কিছু যাতে লুকানো না হয়, এই দাবি রাখেন সোনিয়া গান্ধী। আর সেই কারণে মাঝে মধ্যেই সর্বদল বৈঠক করার কথা বলেন সোনিয়া গান্ধী।

এদিকে, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। জুনের ২৩ তারিখ ভার্চুয়াল কনফারেন্সে বসছে রাশিয়া-ভারত-চিন।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব নিশ্চিত করেছেন, দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াই এবং রাশিয়ার মন্ত্রী সেরগেই লাভরভ সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলেই জানা গিয়েছে। ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষের জন্য বৈঠক ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।