করোনা সংক্রমণের জেরে দেশজুড়ে জারি হয় লক ডাউন আর এর জেরেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পরীক্ষাগুলো স্থগিত হয়েছে। অবশেষে কিছু পরীক্ষা বাতিল পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছে বোর্ডগুলি। একই ভাবে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার তিনদিনের প্রায় পনেরোটি বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায় লক ডাউনের জেরে। এর ফলে বিপাকে পড়ে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী। 

কিছুদিন আগে সরকারের তরফে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা জুলাইয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার পরেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করে। ২, ৬ ও ৮ই জুলাই উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা গুলি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।  

ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অফ হাইয়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন এর তরফে শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্থগিত তিনটি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করেছে।

 ২রা জুলাই, ২০২০ শিক্ষা বিজ্ঞান/ পদার্থবিদ্যা/ পুষ্টিবিদ্যা/ অ্যাকাউন্টেন্সি
 ৬ই জুলাই, ২০২০  সংস্কৃত/ রসায়ন/ অর্থনীতি/ পার্সিয়ান/ আরবি/ ফ্রেন্স/ জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশন
 ৮ই জুলাই, ২০২০ ভূগোল/ স্ট্যাটিসটিকস, ভূগোল, কস্টিং এবং ট্যাক্সেসন, হোম ম্যানেজমেন্ট এবং ফ্যামিলি রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের


ইতিমধ্যে পরীক্ষা সংক্রান্ত গাইড লাইনও প্রকাশ  করেছে সংসদ। পাশাপাশি, জানা গেছে, সেন্টার গুলিতে শিক্ষক থেকে শুরু পরীক্ষার্থী সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে সংসদ। একথায় সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এমন পরিস্থিতিতে এবার পরীক্ষা স্থগিত করতে সরব হয়েছে স্বয়ং পরীক্ষার্থীরাই। 

করোনা আবহে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার নির্ঘন্ট ঘোষণা পরের থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা  এবং তাদের অভিভাবকরা  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও পোস্ট করে, বার্তা প্রেরন করে নানা ভাবে বিরোধ করেছে । একই সাথে এই পরীক্ষা বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রীম কোর্টে । তাই  রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিক এবং সিবিএসই’র পরীক্ষার ভাগ্য  সুপ্রিম কোর্টে হওয়া জনস্বার্থ মামলার রায়ের উপররেই নির্ভর করছে। এই মামলার  শুনানি আছে ২৩ জুন অর্থাৎ আজ।

তবে যদি পরীক্ষা না নেওয়া যায় তবে কিভাবে মূল্যায়ন হবে সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। একান্তই যদি পরীক্ষা না নেওয়া যায়, সেই ক্ষেত্রে কিভাবে নম্বর দেওয়া যায়, তা নিয়ে একাধিক প্রস্তাব জমা পড়ছে সংসদে। যেমন সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতি প্রস্তাব দিয়েছে, প্রজেক্টের নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে হাজিরার উপর ২০ শতাংশ এবং যে পরীক্ষাগুলি হয়ে গিয়েছে, তার প্রাপ্ত নম্বরের কুড়ি শতাংশ হিসাব করে বাকি বিষয়ের নম্বর দেওয়া হোক। 

যদিও সবকিছু নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর। এই মুহূর্তে সমস্ত ছাত্র-অভিভাবক-শিক্ষক তাকিয়ে আছেন সুপ্রীম কোর্টের রায়ের দিকেই।