ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ২০শে মে-র মধ্যে ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে তীব্র ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। সমুদ্র এসময় উত্তাল থাকবে।


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট  নিম্নচাপের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে  ক্যাবিনেট সচিব শ্রী রাজীব গৌবার নেতৃত্বে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কমিটি (ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি – এনসিএমসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির আধিকারিকরা ঘূর্ণিঝড়ের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁদের প্রস্তুতির কথা জানান। রাজ্য সরকারগুলি মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। যে সব অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই সব এলাকাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে।


জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও রাজ্য সরকারগুলি এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে।



update credit: WeatherofWestBengal







  • ঘূর্ণিঝড় আম্ফান বর্তমানে দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
  • ঘূর্ণিঝড় টি আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যেই শক্তি বৃদ্ধি করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
  • ঘূর্ণিঝড়টি আরো শক্তি বৃদ্ধি করে, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ ১৮ ই মে এর মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে শুরু করবে।
  • ঘূর্ণিঝড় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবার পর আরো শক্তি বৃদ্ধি করে ১৯ শে মে দুপুরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় নিজের শক্তি আরো অনেকগুণ বৃদ্ধি করে অতি তীব্র শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
  • অতি তীব্র শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের আশপাশের অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ তখন ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ১৯ মে থেকে ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হলে তা উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলের খুব কাছে। 
  • ২০ মে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় এসে পৌঁছাল তখন বাতাসের গতিবেগ কিছুটা কমে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে।
  • আগামী ২০ মে ঘন্টায় ১৯০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে পাথর প্রতিমার উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
  •  বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থিত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মধ্যরাতের পর এক্সট্রেমলি সিভিয়ার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানে এই ঘূর্ণিঝড় ধারনাহীন শক্তিশালী হয়ে সুপার সাইক্লোন আম্ফানে পরিণত হয়েছে।
  • বর্তমানে কেন্দ্রীয় এলাকার চারপাশের বায়ুর চাপ ৯২১ মিলিবার এবং বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০-২৪০ কিলোমিটার । 
  •  ১৯-২২ তারিখের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বা দ প বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত করতে পারে। এর প্রভাবে ১৯-২২ তারিখের মধ্যে প্রবল থেকে প্রবলতর দুর্যোগ ঘনিয়ে আসছে কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ও উত্তর ওড়িশায়।
১৯ মে-সকাল ৬ টা ৫৪ঃ 

  • ক্রমেই দিক পাল্টাচ্ছে ‘আম্পান’। আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, শক্তি সঞ্চয় করে সুপার সাইক্লোন হিসেবে বুধবার (২০ মে) স্থানীয় সময় রাত ৯ থেকে ১২টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা ও হলদিয়া এবং বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। আম্পানের বর্তমান অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার দীঘা সমুদ্র থেকে মোটামুটি ৯০০ কিলোমিটার দূরে। 
  • গতকাল দুপুরের পর থেকেই আম্পান শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং উপকূলে আছড়ে পড়ার আগেই এটি সুপার সাইক্লোনের রূপ নেয়। 
  • এছাড়া আম্পান ক্রমশ উত্তর থেকে উত্তরপশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে উড়িষ্যা উপকূলে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হবে। কোনো কোনো জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ওই রাজ্যটিতে।
সম্ভাবনাঃ 
  • ৫৫-৭৫ কিমি গতিবেগে ১৯ তারিখ সকালের পর থেকেই ঝঞ্ঝার সম্ভাবনা পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায়। এরপর ধীরে ধীরে হাওয়ার গতিবেগ বাড়বে।
  • ২০ তারিখ সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা এই সকল জেলায় ঝড়ের গতিবেগ পৌঁছে যাবে ৭৫ থেকে ৯৫ কিমিতে। যদিও এই ঝড়ের গতিবেগ ওড়িশায় ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে  ১১০-১৩৫ কিমিতে।
  • ২০ তারিখ দুপুর থেকে রাত্রি পর্যন্ত ১৫৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ওই একই সময়ে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ঝড় বইতে পারে ১০০-১২০ কিমি গতিবেগে।

1999 সালের উড়িষ্যার বিধ্বংসী ঝড়কে অতিক্রম করবে আম্ফান। এমনকি বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড করা সবথেকে শক্তিশালী ঝড় হতে চলেছে আম্ফান। এমনই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।


গ্রামীন কৃষি মৌসম সেবা, পুন্ডিবাড়ির নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন- "১৯ ও ২০ মে ঘুর্ণিঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।"


3:45 pm update:
  • বিএসএফ সুন্দরবনে নিরাপদে জাহাজ, টহল দেওয়া নৌকাগুলি সরিয়েছে।
  • আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) জানিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সুন্দরবনের নিকটবর্তী দিঘা (পশ্চিমবঙ্গ) এবং হাতিয়া দ্বীপপুঞ্জের (বাংলাদেশ) মধ্যে স্থলভাগের উপর দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • আম্ফান বর্তমানে পারাদীপ (ওড়িশা) থেকে প্রায় 520 কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।