করোনা পরিস্থিতির জেরে সারা দেশ জুড়ে চলছে লক ডাউন। তৃতীয় দফার লক ডাউন আগামী ১৭ই মে পর্যন্ত বহাল রয়েছে। এর মাঝেই মঙ্গলবার রাত ৮টায় জাতির উদ্দ্যেশে ভাষন দেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

প্রধানমন্ত্রী ভাষনে বলেন, চার মাস ধরে বিশ্ব করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। ভারতে অনেক পরিবার তার স্বজন হারিয়েছে। একটি ভাইরাস বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে, এটা আমাদের কল্পনার বাইরে কিন্তু ভেঙে পড়া, হেরে যাওয়া থেকে আমরা জিতে আসবো। এর জন্য আমাদের আরও দৃঢ় হতে হবে, ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য এগিয়ে যেতে হবে, বিশ্বের সমস্ত দিক থেকে দেখলে ভারতকে মার্গ দর্শক হতে হবে, এটা একমাত্র সম্ভব আত্ম নির্ভর ভারত হয়ে l এত বড় বিপদ ভারতের ক্ষেত্রে একটা সংকেত নিয়ে এসেছে একজোট হবার l একটা উদাহরণ - যখন ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরু হয় তখন ভারতে ppe এর জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়েছিল কিন্তু আজ দৃশ্য অন্য আত্মনির্ভরশীলতায়, তাই বিশ্বে ভারত আশার আলো দেখাচ্ছে l ভারতের বাসুদেবও কুটম্বকম নীতি যা বিশ্বকে নিজের পরিবার পৃথিবীকে মা মনে করে যার প্রভাব বিশ্ব কল্যানে নিযুক্ত l জটিল পরিস্থিতিতেও ভারত ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বিশ্বকে ভারত ওষুধ দিয়ে বিশ্বকে ভরসা দিয়েছে l সব ভারতীয়ের এটা গর্ব। গোটা দুনিয়া বিশ্বাস করে মানবজাতির কল্যানের জন্য ভারত কিছু করতে পারে

ভারতের কাছে ট্যালেন্ট আছে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য। আমরা উঠে দাঁড়াবো, সংকট কাটিয়ে উঠবো। আমরা আত্মনির্ভর হয়ে উঠবো। এখনও ভারত বিশ্ব কল্যাণ করে চলেছে l 

এই শতাব্দীর শুরুতে যখন Y2K সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। তখন ভারতের প্রযুক্তিই বিশ্বকে পথ দেখিয়েছিল। আজ আমাদের সামর্থ্য আছে। আমরা অনেক কিছু করতে পারি আর অবশ্যই করব। আমি চোখের সামনে কচ্ছের ভূমিকম্পের দিন দেখেছি। সব বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। মনে হয়েছিল, মৃত্যুর চাদর তৈরি হয়েছিল কচ্ছে। কেউ ভাবেনি যে পরিস্থিতি বদলাতে পারে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই উঠে দাঁড়ায় কচ্ছ। আমরা চাইলে, কোনও রাস্তাই কঠিন নয়।

আজ আমাদের কাছে সমর্থ আছে সাহস আছে, বিশ্ব মানের বুদ্ধিদীপ্ত দেশবাসী আছে যা বিশ্বকে পথ দেখাবে l ভারত এখন পাঁচটি স্তম্ভ এর উপর দাঁড়িয়ে থাকবে। আত্মনির্ভরতার প্রথম স্তম্ভ অর্থনীতি, দ্বিতীয় স্তম্ভ পরিকাঠামো, তৃতীয় স্তম্ভ টেকনোলজি, চতুর্থ স্তম্ভ ভারতের গণতন্ত্র, পঞ্চম স্তম্ভ ভারতের চাহিদা।

দেশবাসীর জন্য ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষনা প্রধানমন্ত্রীর। যা ভারতের জি ডি পির ১০% এর সমান। এই আর্থিক প্যাকেজ ওই সব শ্রমিকদের জন্য যারা এই মহামারী মোকাবিলায় লড়াই করে যাচ্ছে। এই প্যাকেজ সব নাগরিকদের জন্য যারা নিয়মানুসারে কর প্রদান করে আসছে। আত্মনির্ভর ভারত রিলিফ প্যাকেজ। এই আর্থিক প্যাকেজ দেশের শ্রমিক, ক্ষুদ্র শিল্প যারা দেশের আয়করে বিশেষ ভূমিকা পালন করে তাঁরা লাভবান হবে l যা আগামী দুই তিন দিনে অর্থমন্ত্রী বিস্তারিত জানাবেন l সমস্ত দিক বিবেচনা করে আর্থিক প্যাকেজে অনেক ব্যবধান রাখা হয়েছে। এই প্যাকেজ মধ্যবিত্তদের জন্যে যারা আয়কর দেন l যা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেবে। কুলি, ঠেলাওয়ালা, শ্ৰমিক এই সংকটে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। ওখান আমাদের কর্তব্য তাদের জন্য কিছু করার। সংগঠিত বা অসংগঠিত শ্রেণির শ্রমিক হোক সবার জন্যই আর্থিক প্যাকেজে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

সময় আমাদের শিখিয়েছে দেশীয় জিনিস আপন করে নেওয়ার। বিশ্ব বাজারের সামগ্রীও এক সময় দেশীয় ছিল যা প্রচারের আলোয় এসে বিশ্ব বাজার পেয়েছে। তাই আমাদের দেশীয় সামগ্রীর জন্য আমাদের সর্ব হতে হবে যা ভবিষ্যতে বিশ্ব বাজারে স্থান করে নেবে। খুব কম সময়ে খাদি আর হ্যান্ডলুম বিশ্ব বাজারে স্থান করে নিয়েছে।

বৈজ্ঞানিক, স্বাস্থ্য আধিকারিক সকলেই বলেছেন এই করোনা আমাদের জীবনে স্থায়ী চিহ্ন রেখে যাবে। তাই আমরা মাস্ক ব্যবহার করবো, নিয়ম মেনে চলবো।

পাশাপাশি, লক ডাউন ৪.০ নিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যগুলির পরামর্শ অনুযায়ী ১৮ই মে এর মধ্যে জানানো হবে। নুতন নিয়ম আসতে চলেছে বলেই জানালেন তিনি। 

সকলে মিলে এগিয়ে আসলে আমরা ভারতকে আত্মনির্ভর করতে পারবো।