ফেলুদা এখন সনাক্ত করবে আপনি কোভিড -১৯ এ আক্রান্ত কিনা। বা এককথায় বলতে গেলে, বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাতা-লেখক সত্যজিৎ রায়ের নির্মিত প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্রের নামে নতুন একটি কাগজ-ভিত্তিক পরীক্ষার স্ট্রিপ শীঘ্রই মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে করোনভাইরাস সন্ধান করতে সক্ষম হবে।

'ফেলুদা' পরীক্ষার স্ট্রিপটি নতুন দিল্লির কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি (সিএসআইআর-আইজিআইবি) - - দু'জন বাঙালি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ডঃ সৌভিক মাইতি এবং ডাঃ দেবোজ্যোতি চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি দল উদ্ভাবন করেছে।

সাধারণ কাগজভিত্তিক পরীক্ষার স্ট্রিপটি কোভিড -১৯ পরীক্ষার ব্যায়ভার লাঘব করে দেবে অভাবনীয় খরচে। বর্তমানে ব্যবহৃত রিয়েল-টাইম পলিমেরেজ চেইন বিক্রিয়া পরীক্ষা (আরটি-পিসিআর) লক্ষাধিক টাকার মেশিনারি প্রয়োজন এবং বেসরকারী ল্যাবগুলিতে এর খরচ ৪,৫০০ টাকা ধরা হয়েছে, তবে 'ফেলুদা' পরীক্ষার জন্য ৫০০ টাকার কম খরচ পড়তে পারে। এটি গর্ভাবস্থা পরীক্ষার স্ট্রিপের মতন ব্যবহার করা যেতে পারে।

সিএসআইআর-এর মহাপরিচালক শেখর সি ম্যান্ডে থিয়েটারে জানিয়েছেন-“এই স্ট্রিপটি গর্ভাবস্থা পরীক্ষার স্ট্রিপের মতো হবে এবং এটি ব্যবহারের জন্য কোনও বিশেষ দক্ষতা এবং মেশিনের প্রয়োজন হবে না, যেমনটি অন্যান্য পিসিআর ভিত্তিক পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে প্রয়োজন। এই স্ট্রিপটি কেবল রঙ পরিবর্তন করবে এবং একটি সাধারণ প্যাথলজিকাল ল্যাবটিতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি এটি হবে শতভাগ নির্ভুল”

ম্যান্ডে বলেছেন- "সাধারণত, বিজ্ঞানীরা এই ধরণের কিটগুলি তৈরি করতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেন, তবে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) পাশাপাশি আমরা তিন বা চারটি দেশ এর দ্রুত বিকাশের পথে এগিয়ে চলেছি,"

এ প্রসঙ্গে ড. দেবজ্যোতি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, 'আমরা গত দুবছর ধরে এই স্ট্রিপ টেস্ট কিট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলাম। জানুয়ারিতে যখন চিনে করোনা মহামারির আকার নেয়, তখন আমরা পরীক্ষা শুরু করি।'

বর্তমানে করোনা সংক্রমণ রুখতে ব়্যাপিড টেস্টের উপর জোর দিচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই কিটের অভাব বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি ফেলুদা কিট বাজারে আসে তবে করোনা যুদ্ধে 'ফেলুদা' যে বিশ্বে শ্রেষ্ঠ আসন নিবে তা বলাই বাহুল্য। 

source: the print