করােনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরােধে রাজ্যে সর্বত্র লকডাউন চলছে এবং সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ জুন,২০ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে এই সময়ে মিড-ডে মিল প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। ইতিপূর্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমন্ত শিশুদের মাথা পিছু ২ কেজি করে চাল ও আলু বিতরণ করা হয়েছিল। আবার লকডাউন বাড়িয়ে ৩ মে,২০ পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের পক্ষ থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য মিড-ডে প্রকল্প বন্ধ থাকায় মাথা পিছু ৩ কেজি করে চাল ও ৩ কেজি করে আলু পূর্বের ন্যায় বিতরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । 

এই নির্দেশ প্রকাশিত হওয়ার পর নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষথেকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি  রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং বিদ্যালয় শিক্ষা সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


চিঠিতে জানানো হয়েছে-

প্রথমতঃ বিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে , ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে স্থানীয় প্রশাসনিকস্তর থেকে জীবাণুমুক্ত (স্যানিটাইজ) করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়ােজন। মিড-ডে মিলের সাথে যুক্ত সেলফ হেল্প গ্রুপের সদস্যা/মাতা শিক্ষা কমিটির সদস্যা/ভি.ই.সি./W.E.C.-র সদস্য/সদস্যা যারাই এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন তাদেরকে স্থানীয় প্রশাসনিকস্তর থেকে পরিমাণ মতাে হ্যান্ড ওয়াশ / হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক যােগান দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়ােজন। এছাড়া প্রতিটি শিশুর জন্য ন্যূনতম একটি করে সাবান ও মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থা করা ।

দ্বিতীয়তঃ স্থানীয় ব্লক প্রশাসনস্তরে / মহাকুমা পরিষদস্তরে / পৌরসভাস্তরে / মিউনিসিপ্যালিটিস্তরে / পঞ্চায়েতস্তরে এলাকায় মাইকিং-র মাধ্যমে অভিভাবক/অভিভাবিকাদের সােস্যাল ডিসট্যান্স মেনে চলার বিষয়ে সচেতন করে তােলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে যেন প্রত্যেকে এই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করার সময় মুখে মাস্ক কিংবা অন্য কোনভাবে ঢেকে রাখে সে বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তােলা।

তৃতীয়তঃ চাল ও আলু বিতরণের প্রমাণ হিসেবে মাস্টার রােল/রেজিস্টার-এ অভিভাবকদের স্বাক্ষর করানাের ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের প্রবণতা থাকতে পারে ,তাই এই বিষয়টিকে আবিশ্যিক না করা। এই বিষয়ে সমস্ত দায়িত্ব বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও স্থানীয় বিদ্যালয় কতৃপক্ষ নিজেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক। কোনভাবেই এই কাজের জন্য শিক্ষক/শিক্ষিকাগণকে শােকজ বা সাসপেন্ড করা যাবে।

চতুর্থতঃ বাজারে অঘােষিত কারফিউ জারি হয়েছে , তাই দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে বাজারে আলু পাওয়া যাচ্ছে না , আবার কোথাও পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে অনেক বেশী। গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাতে কালাে বাজারি শুরু হয়ে গেছে । তাই বিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা অনুসারে প্রয়ােজনীয় আলু পাওয়া এই মুহুর্তে অসম্ভব , তাছাড়া একসাথে সমস্ত বিদ্যালয়ের আলু একই বাজার থেকে পাওয়া যাবে না। এ ব্যপারে স্থানীয় বি.ডি.ও. কিংবা পৌরসভাকে দায়িত্ব নিয়ে রেশন ডিলার মারফৎ অথবা সরাসরি বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রথমবারের বকেয়া পরিশােধ ও দ্বিতীয়বারের আলু ক্রয় করার জন্য প্রয়ােজনীয় অর্থ সর্বত্র দ্রুত বরাদ্দ করা প্রয়ােজন। ফলতঃ এই পরিস্থিেিত এই কর্মসূচি রূপায়নের জন্য বি.ডি.ও./পৌরসভার মাধ্যমে গণবন্টন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কার্যকরী করলে বিপদ এড়ানাে যাবে। এর জন্য প্রয়ােজনীয় শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিদ্যালয় থেকে পৌঁছে দেওয়া যাবে।