গৌতম  সাহাঃ

সারা বিশ্ব জুড়ে করোনা থাবা বসিয়েছে। বাদ যায়নি ভারতও। দিন যতই গড়াচ্ছে বাড়ছে সংক্রমণের হার। গত ২৪ শে মার্চ থেকে দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়েছে। ইতিমধ্যে সবাই চেষ্টা করেছেন যে যার বাড়ি ফিরে যেতে ও বাড়িতে সুরক্ষিত হয়ে থাকতে। কিন্তু বাড়ি ফিরে যেতে পারেনি পুরুলিয়া জেলায় সিধু কানু মিশনের ২৫ জন অনাথ আদিবাসী ছাত্রছাত্রী। প্রায় দিনের পর পর দিন অভুক্ত থেকে দিন গুজরান করছিল তারা আর এগিয়ে চলেছিল এক অনিশ্চিত জীবনের দিকে। ঠিক এমতবস্থায় তাদের কাছে মৃতসঞ্জীবনী সুধা হয়ে এগিয়ে এলেন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হলেন তাদের কাছে। তারপরেই তাদের হোস্টেলে শুরু হল রান্নাবান্না। ফলে বেশ কয়েকদিন ধরে না খেতে পেয়ে প্রায় মৃত্যু মুখ থেকে জীবনের পথে ফিরে এলেন তারা। বেশ কয়েকদিনের অভুক্ত থাকার পর খেতে পেয়ে তাদের চোখ থেকে ঝড়ে পড়ল আনন্দ অশ্রু।

২০১৪ সালে নরেন হাঁসদা নামে এক সমাজসেবীর হাতে তৈরী হয় এই 'সিধু কানু মিশন' টি যেটি পুরুলিয়া জেলা থেকে প্রায় ৩০ কিমি দুরে অবস্থিত আড়সা ব্লকের ভালিডুংরী গ্রামে এক পাহাড়ের তলায় অবস্থিত। প্রধানত গরীর আদিবাসী সাঁওতাল ছেলেমেয়েদের কে শিক্ষার আলো দিয়ে জীবনের মূলস্রোতে নিয়ে আসতেই এই উদ্যোগ। তবে কোন রকম সরকারী সাহায্য ছাড়াই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চলে আসছে। প্রায় ১২০ জন গরীব আদিবাসী সাঁওতাল ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে আসছেন। তারমধ্যে প্রায় ২৫ জন অনাথ পড়ুয়া আবাসিক সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকেন সঙ্গে জোটে দুবেলা আহার।

কিন্তু করোনা পরবর্তী লকডাউন চালু হওয়ার পরে তাদের খাওয়া দাওয়ার জোগাড় করা বেশ চাপ হয়ে পড়েছিল। খবরটি জানার পর প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন UUPTWA,পুরুলিয়া জেলা কমিটি যোগাযোগ করেন জেলার পুলিশ সুপার মাননীয় S.Selvamurugan সঙ্গে। তারপরই জেলা প্রশাসনের দ্রুত সহযোগীতায় তাদের কাছে রেশন পৌঁছে যায়।দ্রুত এই মানবিক সাহায্যের কারণে তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জেলা কমিটি।