পয়লা বৈশাখ  বা পহেলা বৈশাখ  বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস, বৈশাখের ১ তারিখ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন তথা বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। এইবছর বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ মঙ্গলবার ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ আজ। এই দিনটি সকল বাঙালি জাতির কাছে ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন।

পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে নববর্ষ পালিত হয়। ত্রিপুরায় বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেন। সেই হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত। গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পালিত হয়। এই দিনটিতে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত। যে কোনও ব্যবসায়ীদের কাছে এই দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়, যাকে হালখাতা বলা হয়। 

এই উৎসব শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তাভাত খাওয়া, হালখাতা খোলা ইত্যাদি বিভিন্ন কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়। বাংলা নববর্ষের শুরুতে সকলে "শুভ নববর্ষ" জানিয়ে শুভেচ্ছা আদানপ্রদান করে। নববর্ষের সময় বাংলাদেশে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।


২০১৬ সালে, ইউনেস্কো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এই উৎসব শোভাযাত্রাকে "মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য" হিসেবে ঘোষণা করে। এই উৎসবে নতুন বস্ত্র পরার রীতি রয়েছে। এছাড়াও, অনেকেই বাঙালি সুস্বাদু পদ রান্না করে, খেয়ে দিনটিকে উদযাপন করে।

বাংলা ক্যালেন্ডারে ৭-ম শতাব্দীর রাজা শশাঙ্ক চালু করেছিলেন। পরে এটি মুগল সম্রাট আকবর সংশোধন করেছিলেন কর আদায়ের উদ্দেশ্যে। ঐতিহাসিকদের মতে, আকবর দ্বারা অনুসরণ করা চন্দ্র ইসলামিক হিজরি ক্যালেন্ডারটি সৌর কৃষিচক্রের সঙ্গে কখনও মিলিত হয় না। 'ফশোলি শান' নামে একটি ফসল কাটার সময়টি ক্যালেন্ডারে যুক্ত হয় এবং কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে এই সময় থেকেই বাংলা ক্যালেন্ডারের আবির্ভাব।

এই দিনটিতে মিষ্টিমুখ, বাড়িতে বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ। আলপনা এঁকে, বাড়ির লক্ষ্মীকে পুজো করা হয়। বাঙালিরা নতুন পঞ্জিকা কেনে। বাংলা ক্যালেন্ডার কেনে। একে অন্যের বাড়ি গিয়ে আনন্দ-মজার মধ্যে দিয়ে দিনটি কাটায়।

কিন্তু এই প্রথম একটা জাতি (পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, ত্রিপুরা সহ সমস্ত অঞ্চলই) করোনা ভাইরাসের তান্ডবে রয়েছে গৃহবন্দী । সমগ্র বিশ্ব আজ মৃত্যুর আতঙ্কে দিশেহারা। তবুও নতুন পৃথিবীর স্বপ্নে বিভোর বাঙালি। সব শুভ হবে এবার-এই আশায়  বর্ষ বরণ।


সমস্ত তথ্য ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত