রাজ্য জুড়ে আংশিক লকডাউন জারি হয়েছে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই। কোচবিহার জেলাতেও পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। গতকাল  জেলা সমাহর্তা একটি নির্দেশে জানিয়েছেন মেখলিগঞ্জ পৌর শহর, হালদিবাড়ি পৌর শহর, দিনহাটা পৌরসভা শহর, মাথাভাঙ্গা পৌর শহর, তুফানগঞ্জ পৌর শহর এবং  বক্সিরহাট থানার অন্তর্গত সমস্ত গ্রামীণ বাজারে আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি থাকবে।  যেমন-

1. ট্যাক্সি, অটোরিকশা সহ কোনও গণপরিবহন পরিষেবা অনুমোদিত হবে না। ব্যতিক্রম হবে-হাসপাতাল, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড টার্মিনাল থেকে  যে সমস্ত যানবাহন খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় পণ্য বহন করে।

2. সকল দোকান, গুদাম, অফিস, কারখানা সব বন্ধ থাকবে। সাথে সাথে সকল কাজ বন্ধ থাকবে। 

৩. বিলেত ফেরৎ সকল ব‍্যক্তিকে স্বাস্থ‍্য প‍রীক্ষা করতে হবে ও নির্দিষ্ট সময়ের জন‍্য হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। 

৪. জনগনকে বিশেষ কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হচ্ছে। বিশেষ কাজে বাইরে বেরোলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। 

৫. নিম্নলিখিত প্রয়োজনীয় বেসরকারী সংস্থাগুলি বিধি নিষেধ থেকে বাদ পড়ল: 
i) আইন, আদালত, কারেকশনাল সার্ভিস 
ii) স্বাস্থ‍্য পরিষেবা 
iii) পুলিশ, আর্মড ফোর্স, প‍্যারামিলিটারি 
iv) বিদ‍্যুৎ, জল 
V) দমকল, সিভিল ডিফেন্স, জরুরীকালীন পরিষেবা 
vi) টেলিকম, ইন্টারনেট, আইটি, আইটিইএস 
vii) ব‍্যাঙ্ক ও এটিএম
viii) খাদ্য (পিডিএস সহ), মুদি, শাকসবজি, ফলমূল, মাংস, মাছ, রুটি এবং দুধ বিক্রয়, এবং সহ খাদ্য সহ পরিবহন
ix) মুদি, খাদ্য সামগ্রী এবং খাবারের হোম ডেলিভারি বাণিজ্য
x) পেট্রোল পাম্প, এলপিজি গ্যাস, তেল সংস্থাগুলি তাদের গোডাউন এবং পরিবহন
xi) ওষুধের দোকান, চশমার দোকান, ওষুধ উৎপাদন এবং তাদের পরিবহন
xii). ক্রমাগত প্রক্রিয়া প্রয়োজন উৎপাদন এবং উৎপাদন ইউনিট পরে কাজ চলতে পারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া
xiii) মুদ্রণ, বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যম
xiv) প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনে নিযুক্ত উৎপাদন ইউনিট

৬. জনসাধারণের জায়গায় 7 জনেরও বেশি ব্যক্তির যে কোনও জামায়েত নিষিদ্ধ করা হবে।
৭. কোন স্থাপনা অপরিহার্য কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকলে তারা নিম্নস্বাক্ষরকারীর কাছ থেকে স্পষ্টতা চাইবে।
৮. CMOH এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ এইসব নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কোচবিহার জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন অনুযায়ী উপরোক্ত অফিসারদের সবরকম সহায়তা প্রদান করবে।
৯. কোনও ব্যক্তি এই নির্দেশাবলী লঙ্ঘন করলে তা ভারতীয় পেনাল কোডের 188 ধারা (1860 এর 45) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করা হবে ।
১০. পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা কোচবিহার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পূর্বের জারি করা অন্যান্য নির্দেশাবলী একইরকম কার্যকর থাকবে।

কোচবিহার জেলায় শুধুমাত্র পৌর এলাকা গুলো লকডাউন রাখার কথা থাকলেও বিভিন্ন গ্রামীন বাজার গুলোতেও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবী করছে সাধারণ জনগণ।  সাধারণ মানুষের বক্তব্য ভিন রাজ্য থেকে যে সমস্ত শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন তাঁদের বেশিরভাগই গ্রামীন এলাকার। ফলে বিপদের সম্ভাবনা গ্রামীন এলাকাতেই বেশি।

তাই দ্রুত গ্রামীন বাজার গুলোকে লকডাউনের আওতায় আনার দাবী উঠছে বিভিন্ন মহলে। পেটলার স্থানীয় বাসিন্দারা পেটলা বাজার এবং গোসানীমারি বাজার নিয়েও চিন্তিত। এই দুই বাজারে বিপুল লোক সমাগম ঘটে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে হাটে আগত লোকজনদের সচেতন করতে দেখা যাচ্ছে -যাতে অতিরিক্ত সময় বাজারে অতিবাহিত না করেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী প্রশাসনিক ভাবে অতিরিক্ত লোক জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

গতকাল দিনহাটা রংপুর রোডের সমস্ত গ্রামীন এলাকায় বিডিও ও আইসি এর নেতৃত্বে সন্ধ‍্যায় লকডাউন এর ব‍্যবস্থা করা হয়। গোটা বাজারে লকডাউনের নিয়মে যেসব দোকান বন্ধ সেসব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আজ সকাল থেকেই নিগমনগর বাজারে দিনহাটা থানার নেতৃত্বে চেকিং বসানো হয়েছে। চলছে স্বাস্থ্য প্রচার থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা প্রচার।