![]() |
প্রতীকী ছবি |
করোনা জ্বরে কাঁপছে গোটা দেশ। হু হু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমন,আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ,মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।গোটা দেশে চলছে এক অঘোষিত কার্ফু।বিদ্যালয়,কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় বন্ধ।রাস্তা ঘাট প্রায় শুনশান।লোকজনও খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোচ্ছে না।সরকারী,বেসরকারী হাসপাতাল,নার্সিং হোম সহ প্রশাসনের যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি তুঙগে।
সরকারী স্তরে লোকজনদের অনুরোধ করা হচ্ছে সামাজিক ভাবে মানুষে মানুষে দূরত্ত্ব তৈরী করতে। রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন গত ১৬ ই মার্চ থেকে আগামী ১৫ ই এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার যাতে ছাত্রছাত্রী বা শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেতে আসতে কোন রকম এই মারাত্মক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত না হন।
কিন্তু আজ শিক্ষা দপ্তরের একটি সরকারী নোটিশে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে আগামী ২৩ শে মার্চ সোমবার ও ২৪ শে মার্চ মঙগল বার প্রতিটি প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল প্রোগ্রামের অন্তর্গত প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টে পর্যন্ত আলাদা আলাদা শ্রেণী অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীকে ২ কেজি করে চাল ও আলু দিতে হবে।
তবে কোন ছাত্র-ছাত্রী কে আসতে বারণ করা হয়েছে।নির্দেশ অনুযায়ী বাবা-মায়েরা সেটা নিয়ে যাবে এবং কোন জমায়েত করা যাবে না।বিদ্যালয়ে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবানের ব্যাবস্থা রাখতে হবে। প্রসঙ্গত স্যানিটাইজার ও মাস্কের সঙ্কট রয়েছে।
প্রতিটি বিদ্যালয় কে ১৮ টাকা প্রতি কেজি দরে আলু স্থানীয় বাজার থেকে বিদ্যালয় কতৃপক্ষকে কিনতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিকাশ ভবনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে যেটি সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টে পর্যন্ত চালু থাকবে।এ ব্যাপারে স্থানীয় এস.আই,ডি.আই বা বি.ডি.ও,এস.ডি.ও বা মিউনিসিপালিটির সাহায্য নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চাল,আলু বিলি করার রেজিস্টার ও আলু কেনার বিল প্রতিটি বিদ্যালয়কে রাখতে হবে।প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা দের এ বিষয়ে প্রয়োজন মতো সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকার বা অশিক্ষক কর্মীদের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে।
প্রতিদিন সেই এই কাজের রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিকাল ৪ টার মধ্যে পাঠাতে হবে।এছাড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে শনিবার ও রবিবার বিদ্যালয় খুলে রেখে সামগ্রিক বিষয়ে তদারকি করার। এমনকি বিলি করবার চাল ও আলু রবিবারের মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে যাতে চলে আসে তা নিশ্চিত করা।
এখন এই নির্দেশ পাওয়ার পরে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সরকারী নির্দেশ তাই সেটা মানতেই হবে আবার ট্রেনে,বাসে ট্রামে করে তাদের প্রচুর মানুষের মধ্যে গিয়ে যাতায়াত করে বিদ্যালয়ে পৌছতেই হবে।এছাড়া বিদ্যালয়ে চাল,আলু আনতে আসা বা রেজিস্টার খাতায় সই বা আঙুলের ছাপ দিতে চাওয়া প্রচুর মানুষের মুখোমুখি হতে হবেই তাই করোনা ভাইরাস ছড়াবার আতঙক থেকেই যাচ্ছে।
আবার বাজারে আলু অপ্রতুলতার জন্য কিভাবে তা জোগাড় করবেন তা ভেবে ঘুম উধাও হয়ে গেছে।এমনকি প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের কোন মাস্ক দেওয়ার ব্যাবস্থাও যে থাকছে না বা উপস্থিত বাবা-মায়েদের মুখেও মাস্ক যে থাকবে না সে বিষয়ে যথেষ্ট চিন্তার বিষয়।
তাছাড়া এই ভাবে চাল,আলু বিলির খবর পেলে তারা সবাই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই একসঙগে জমায়েত করবে সেটিও তাদের চিন্তার বিষয়। তাছাড়া রবিবার ট্রেন না চলার বিষয়টি সংবাদে জানা যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু বাজার রবিবার পুরোপুরি বন্ধ।
তাই এমতোবস্থায় তারা সফলভাবে এই কর্মসূচীকে কি ভাবে পালন করবে তা ভেবে তাদের রাতের ঘুম চলে যাবার উপক্রম হতে চলেছে।
আবার রবিবার মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশ মতো সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত জনতা কার্ফু কর্মসূচীর বিষয়টির কথাও তাদের ভাবাচ্ছে।
ফলে সবমিলিয়ে কার্যত দিশেহারা বিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষাকর্মীরা ।
Social Plugin