নিজস্ব প্রতিনিধি,ব্যারাকপুরঃ- গত নভেম্বরের ২৭ তারিখে বিজিটিএ'র প্রতিনিধিদের সাথে মিটিং করে টিজিটি স্কেল প্রদানের আশ্বাস দিয়েছিলেন স্বয়ং শিক্ষা মন্ত্রী। তার পর কেটে গেছে প্রায় দু সপ্তাহ, কিন্তু না বেরিয়েছে শিক্ষা দপ্তরের রোপা, না পাওয়া গেছে টিজিটি প্রদানের কোন ঈঙ্গিত। তাই বৃহত্তর গ্র‍্যাজুয়েট টিচারস এসোসিয়েশান বা বিজিটিএ আবার শুরু করেছে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন। এমনটা ই দাবী করা হয়েছে বিজিটিএ'র তরফে। আজ বিজিটিএ উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির তরফে ব্যারাকপুরে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ব্যারাকপুর সন্নিকস্থ লালকুঠী টেলিফোন এক্সচেঞ্জের কাছে বেলা দুটোর কাছাকাছি প্রায় ছয় শতাধিক গ্র‍্যাজুয়েট টিচার এসে জড়ো হন। ২-১০ মিনিট থেকে ৩-৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ কর্মসুচী। প্রতিটি বক্তার সংক্ষিপ্ত ভাষনে যে দাবী গুলি উঠে আসে সেগুলি হল-

১. মহামান্য হাইকোর্টের রায় কার্যকর করে টিজিটি স্কেল সহ শিক্ষা দপ্তরের রোপা বের করা,যেখানে পিজিটি ও টিজিটি'র মুল বেতনের ফারাক থাকবে ২৭০০ টাকা।

২. হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী ২০০৬ থেকে নোশানাল বেনিফিট প্রদান করা। অথবা পে কমিশনে বিজিটিএর জমা দেওয়া ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর (মুল বেতন×১.১৭×২.৫৭, পে ব্যান্ড ৯০০০-৪০৫০০, গ্রেড পে ৪৬০০ ধরে ইনিশিয়াল বেসিক ১৪৮৮০ ধরা। এখানে ১.১৭= ১৪৮৮০) কার্যকর করা।

৩. সরকারী স্কুল কলেজ ও অন্যান্য কর্মচারীদের মত গভঃ স্পনসরড/এইডেড স্কুল ও মাদ্রাসা টিচারদের CAS Facility ( ৮-১৬-২৫ বছরের সুবিধা) দেওয়া।

৪. কুখ্যাত আইন Control of Expenditure Act 2005 বাতিল করা, বিবিধ। বিক্ষোভ সমাবেশের শেষে শুরু হয় স্লোগান সহকারে মিছিল। বিশাল লম্বা মিছিল ঘোষ পাড়া রোড,ব্যারাকপুর-পলতা রোড,সীদ্ধান্ত পাডা মেন রোড অতিক্রম করে ৩-৫০ মিনিট নাগাদ পৌঁছায় ব্যারাক পুর স্কুল পরিদর্শক(মাধ্যমিক) এর অফিসে। সেখানে উঃ ২৪ পরগনা বিজিটিএ'র পক্ষ থেকে ডি.আই. সাহেক দেওয়া হয় ডেপুটেশন।

আরও পড়ুন- DA মামলায় নয়া মোড়-জানুন বিস্তারিত 

ডেপুটেশন দেওয়ার পর উত্তর চব্বিশ পরগণা বিজিটিএ জেলা কমিটির সভাপতি শিক্ষক সুকৃতি মাইতি বলেন,"আমরা ডি আই সাহেব কে ডেপুটেশন দিলাম, উনি কথা দিয়েছেন শীঘ্রই আমাদের দাবীগুলি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে উনি জানাবেন।" তিনি আরো বলেন, " একটা জিনিস পরিষ্কার করে দেওয়া ভাল যে আমরা সরকারে কাছ থেকে কেন্দ্রের দেওয়া বেতন দাবী করছি না। শুধু এই টুকু দাবী করছি যে সরকার মহামান্য হাইকোর্টের রায় কে মানুন। সেই রায়ে আমাদের কে যতটুকু দিতে বলা হয়েছে ঠিক ততটুকুই আমাদেকে দিন। এটা আজ শিক্ষক সমাজের কাছে একটা বড় লজ্জার বিষয় যে পশ্চিম বঙ্গে সরকার কে হাই কোর্টের রায় মানানোর জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে! খোদ রাজ্য সরকার ই যদি ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ হাই কোর্ট কে অবমাননা করেন তাহলে আইন ব্যবস্থার উপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থাটাই উঠে যাবে!" শিক্ষা মন্ত্রীর আশ্বাসের পর ও আন্দোলন কেন এই প্রশ্নের জবাবে বিজিটিএ'র সাধারণ সম্পাদক শ্রী সৌরেন ভট্টাচার্য টেলিফোনে বলেন, "আমাদের আন্দোলন মন্ত্রীর আশ্বাস কে কোনভাবেই প্রভাবিত করবে না, কেননা আমরা আন্দোলন করছি হাইকোর্টের রায় কে মান্যতা দেওয়ার জন্য। মন্ত্রী মশাইকে বেশী কিছু করতে হবে না শুধু হাই কোর্টের রায় মেনে শিক্ষা দপ্তরের রোপা টি বের করুন। আর তা না হলে আমরা মহামান্য হাইকোর্টের রায় কে মান্যতা দেওয়ার জন্য তীব্র আন্দোলনে অংশ নেব,যে আন্দোলন এযাবৎকাল সংঘটিত হয়নি এই পশ্চিম বঙ্গে।"