file pic-bgta

আরও একবার বৃহত্তর শিক্ষক আন্দোলনের সাক্ষী হতে চলেছে রাজ্যবাসী।এবার শুধু আন্দোলন বা বিক্ষোভ সমাবেশ নয়,আমরন অনশনের ডাক দিয়েছে গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের সংগঠন বিজিটিএ। বিজিটিএর শীর্ষ নেতৃত্বরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে,৮ ই জানুয়ারির মধ্যে তাদের ন্যায্য অধিকার টিজিটি স্কেল দিতে হবে।নইলে পরের দিন অর্থাৎ ৯ ই জানুয়ারি থেকে তারা চরম আন্দোলনের পথ বেছে নেবেন।

বৃহত্তর এই আন্দোলনের লক্ষ্যে গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করতে জেলায় জেলায় সংগঠনকে আরও মজবুত করতে ইতিমধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বৃহত্তর গ্রাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বিজিটিএ। এর জন্য জেলা থেকে ব্লক স্তরে কমিটি গঠন করা হয়েছে।নির্দিষ্ট এরিয়া অনুসারে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দরা ঐ এরিয়ার অন্তর্গত বিদ্যালয় গুলিতে গিয়ে কর্মরত গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য এবং মূল দাবিদাবা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যাতে গ্রাজুয়েট শিক্ষকরা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা সম্পর্কে অবগত হতে পারেন এবং এই দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসেন। এর ফলে একদিকে সংগঠন যেমন আরও মজবুত হয়ে উঠেছে, তেমনি অন্যদিকে সরকারের বিরুদ্ধে আরও বেশি করে চাপ সৃষ্টি করা যাবে বলে সংগঠন মনে করছে।
ইতিমধ্যে সংগঠনের তরফ থেকে আন্দোলনের প্রাক্‌প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ২০২০ থেকে কোন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকই আর যেন উচ্চমাধ্যমিকের ক্লাস না করান। এমনকি গত কাল রাজ্যের সমস্ত প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ স্বপন কুমার মন্ডল স্যোশাল মিডিয়ায় খোলা চিঠি দিয়েছেন। সেখানে জানিয়েছেন- "বিজিটিএ'র তরফ থেকে এই লেখার মাধম্যে আপনাদের কে আবার অনুরোধ জানালাম,গ্র‍্যাজুয়েট টিচারদের সমস্যার প্রতি সহানুভূতিশীল হোতে। একটি শিক্ষিক সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্ব হিসাবে, সর্বোপরি একজন শিক্ষক হিসাবে একজন প্রসাশক শিক্ষকের কাছে এই প্রত্যাশা স্বাভাবিক বলে ই আমি মনে করি। তথাপি যারা যারা নানা হুমকী দিচ্ছেন বা বা শোকজ করছেন বা করবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে এতকিছুর পর ও যদি এমনটা করতে ইচ্ছা হয় তো করুন। এর জবাব বিজিটিএ ই দেবে একটি অরগানাইজড শিক্ষক সংগঠন হিসেবে। প্রয়োজনে বিজিটিএ আইনের সাহায্য নিতে ও প্রস্তুত৷" 

প্রসঙ্গত,দীর্ঘদিন ধরে তারা টিজিটি স্কেলের জন্য নির্ধারিত পে ব্যান্ড ৪,গ্রেড পে ৪৬০০ এবং পে স্কেল ৯০০০-৪০৫০০ কার্যকর করার দাবি রাজ্য সরকারের কাছে করে আসছেন।কিন্তু রাজ্যসরকার তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করায় তাঁরা এই নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন।আদালতের মান্যতা পাওয়া সত্ত্বেও রাজ্যসরকার তা কার্যকর করতে গড়িমসি করে আসছে।এদিকে পে কমিশনের রিপোর্টে টিজিটি স্কেল না থাকায় তারা পে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা দায়ের করেছেন।

মূলত,পে কমিশনের রিপোর্টে গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হলেও তারা আশা করেছিলেন যে,শিক্ষকদের রোপাতে হয়তো তাদের দাবি মেনে টিজিটি স্কেল দেওয়া হবে।কিন্তু রোপা বের হওয়ার পর দেখা যায় যে এখানেও তাদেরকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।ফলে এভাবে বার বার গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করায় তাদের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।যদিও পে কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের কাছ থেকে পাওয়া একটি চিঠি অনুসারে এখনও রোপাতে তাদের স্কেল সংশোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।কিন্তু তা আদৌ কবে করা হবে সে সম্পর্কে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। 

তাই বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন আর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে নারাজ। তারা এবার রাজ্যসরকারকে ৮ ই জানুয়ারির ডেডলাইন বেধে দিয়েছেন। এর মধ্যেই যা করার করতে হবে,নাহলে ৯ ই জানুয়ারি থেকে তারা আমরন অনশনে বসতে চলেছেন।